রথের চাকায় ফাটল ধরায় অমঙ্গলের ইঙ্গিত মনে করেছে অনেকে

1 min read

বিগত দু বছরের করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক কাটিয়ে উঠে চলতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে আবার আগের মতো করে পালিত হয়েছিল পুরীর রথযাত্রা। কিন্তু রথযাত্রার আবহেই ফের পুরীর জগন্নাথ ধামে বিপত্তি। মাত্র চারদিন আগেই রথে চেপে মাসির বাড়ি গিয়েছেন জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা। জানা যাচ্ছে, সেই রথের চাকাতেই মঙ্গলবার সকালে ফাটল দেখা দিয়েছে।

এদিন সকালে ভগবান বলরাম এবং দেবী সুভদ্রার রথের চাকাতে ফাটল দেখতে পান মন্দিরের পুরোহিতরা। ফলে মুহূর্তের মধ্যেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মন্দির চত্বরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। রথযাত্রার সপ্তাহে উৎসবের মাঝেই এই ঘটনা একটি অশুভ ইঙ্গিত, এমনটাই মত মন্দিরের পুরোহিত থেকে পূর্ণার্থী সকলেরই।

রথযাত্রার উৎসবে এই নিয়ে পরপর দু’বার অঘটন ঘটল। প্রথমে পুরীর গুন্ডিচা মন্দিরে উনুন ধ্বংস এবং পরে আচমকাই রথের চাকায় ফাটল। এই ধরনের একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা রীতিমতো চিন্তায় ফেলে দিয়েছে মন্দিরের পুরোহিতদের।

এদিন এই ঘটনা প্রসঙ্গে পুরীর মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে মঙ্গলবার রথযাত্রা উৎসবের দক্ষিণা মোদা রীতি পালনের কথা। মূলত সেই কারণেই এদিন সকালে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার রথ তিনটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন মন্দিরে সেবায়েতরা।

সেই সময়েই দুটি রথের চাকায় ফাটল নজরে আসে। জানা যাচ্ছে ভগবান বলরামের রথ ‘তালধ্বজ’ এবং সুভদ্রার রথ ‘দর্পদলনাতে’ এই বিপত্তি দেখা দিয়েছে। তবে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি মন্দির কমিটিকে জানানো হলে একটি পর্যবেক্ষণ দল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আসেন। এছাড়াও সঙ্গে সঙ্গেই রথের চাকা দুটি মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে বলে খবর।

মন্দির সূত্রে খবর ইতিমধ্যেই ওই দুই রথের ফাটল মেরামতির জন্য চাকাতে লোহার পাত বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। ওড়িশা সরকারের জনস্বাস্থ্য বিভাগের তরফ থেকেই মেরামতির কাজ করা হচ্ছে বলে খবর। রথযাত্রার উৎসবের আগের দিনই স্বয়ং জগন্নাথের রথের চাকাতেও ফাটল দেখা দিয়েছিল এবং সারারাত কাজ করে তা ঠিক করা হয়।

কিন্তু, এত আয়োজনের মধ্যেও মিলল অমঙ্গলের ইঙ্গিত! সাড়ম্বরে সাজানো রথের চাকায় দেখা গেল ফাটল৷ বলরাম ও সুভদ্রার রথের চাকায় ফাটল দেখার পরেই আশঙ্কায় বুক কাঁপছে ভক্তদের৷ এই ঘটনায় ‘অশুভ ইঙ্গিত’ দেখছেন পুণ্যার্থীরা৷

পুরী তীর্থক্ষেত্রে বেশ কিছু দিনধরেই একের পর এক অশুভ ঘটনা ঘটে চলেছে৷ প্রথমে পুরীর গুণ্ডিচা মন্দিরে উনুন ধ্বংস এবং তারপর রথের চাকায় ফাটল৷ কী ইঙ্গিত দিতে চাইছেন ঈশ্বর? পর পর ঘটনায় কপালে ভাঁজ ধর্মপ্রাণদের। পুরীর এই ঐতিহাসিক রথযাত্রায় একের পর এক ধাক্কা ভয় ধরাচ্ছে ভক্তদের মনে৷

প্রসঙ্গত, বাংলা আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে রথের উৎসব হয়ে থাকে৷ এই দিন রথে চেড়ে দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে গুন্ডিচা মন্দিরে যান জগন্নাথ দেব৷ সেখানে সাত দিন থাকার পর ফের রথে চেপে ফেরেন নিজ স্থানে৷ জগন্নাথ দেবের এই যাত্রাকে অনেকই বলেন মাসির বাড়ি যাওয়া৷

পুরাণ মতে, রাজা ইন্দ্রদ্যুমের স্ত্রী ছিলেন গুন্ডিচা৷ তাঁর নামের এই মন্দিরটি জগন্নাথ দেবের মূল মন্দির ‘শ্রীমন্দির’ থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে৷ চারদিক বাগান ঘেরা এই মন্দিরটি জগন্নাথদেবের বাগানবাড়ি নামে পরিচিত৷ অনেকের কাছে এটি ঈশ্বরের গ্রীষ্মকালীন বাগান ‘অপগম’৷ রথযাত্রার দিন তিনটি রথে চেপে তিন ভাইবোন আসেন এই গুণ্ডিচা মন্দিরেই৷

কিন্তু, রথযাত্রার পরদিনই ভাঙচুর চালানো হয় গুণ্ডিচা মন্দিরের রান্নাঘরে। প্রায় ২০টি উনুন ভেঙে ফেলা হয়। রথযাত্রার রাতেই মন্দিরের ভেতর ঢুকে এই তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা৷ এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ভক্তদের মধ্যে। রথের উৎসবের মধ্যে এমন ঘটনা ‘অমঙ্গল’-এর বার্তা বয়ে এনেছে বলেই মনে করেছেন ভক্তরা৷

You May Also Like