কতটা শক্তিশালী হবে এবারের ঘূর্ণিঝড়?

1 min read

গত ৩ বছরের দিকে নজর দিলে দেখা গিয়েছে, এপ্রিল ও মে মাসে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হয়ে আছড়ে পড়েছে পূর্ব উপকূলের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে। ২০১৯ এসেছিল ‘ফণী’ পরের দুটি বছরে আম্ফান আর যশ। শেষের দুটি ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল এরাজ্যে। তাই সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসনিক কর্তা, সবার মনে একই প্রশ্ন এবারের মে মাস কীরকম যাবে? সাধারণত আন্দামান সাগরে কোনও নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার পর তা বঙ্গোপসাগরের উপর অগ্রসর হওয়ার পথে শক্তি বাড়িয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। এবিষয়ে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এপ্রিলের শেষ লগ্নে কোনও নিম্নচাপ তৈরি হয়নি। কিন্তু মে মাসের গোড়ার দিকেই দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে। তবে সেটি শক্তিশালি হয়ে ঘূর্ণিঝড় হবে কিনা তা অবশ্য এখনই বলা যাচ্ছে না। যদি তৈরি হয় তবে ১১ তারিখই আছড়ে পড়বে পূর্ব উপকূলের যে কোন একটি রাজ্যে।

আবহাওয়াবিদরা আরও জানিয়েছেন, এপ্রিল মাসে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার প্রবণতা মে মাসের তুলনায় কম। সাম্প্রতিক কালের মধ্যে ২০১৭ এর এপ্রিলের মাঝামাঝি বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট একটি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছিল মায়ানমারে। ফণী এপ্রিলের শেষ দিকে সৃষ্টি হলেও ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ে মে মাসের শুরুতে। এবার মার্চ ও এপ্রিলের গোড়ায় বঙ্গোপসাগরে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছিল। নিম্নচাপ দুটি আরও শক্তিশালী হবে এমন আশঙ্কা প্রথমদিকে থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। মার্চ মাসে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার প্রবণতা খুব কম । কিন্তু এবার তার ব্যাতিক্রম হয়েছে। মূলত, সমুদ্রে কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়া বেশ কয়েকটি পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। এর মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সমুদ্রের জলের উষ্ণতা। শীতকালে উষ্ণতা কম থাকার জন্য নিম্নচাপ হয় না বা কম হয়। শীত বিদায় নেওয়ার পর সমুদ্রের জলের উষ্ণতা বাড়তে থাকে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জলের উষ্ণতা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হতে শুরু করে। তাপমাত্রা ৩০-৩১ ডিগ্রিতে পৌঁছলে পরিস্থিতি আরও অনুকূল হয়। তবে শুধু জলের উষ্ণতা বৃদ্ধি নয়, আবহাওয়ামণ্ডলে আরও কয়েকটি ‘অনুঘটকের’ উপস্থিতি দরকার হয় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের জন্য। এগুলির ইঙ্গিত পাওয়া গেলে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া শুরু করে আবহাওয়া দপ্তর।

এদিকে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা এখন অনেক আগে থেকে দেওয়া হয়। এর জন্য বহু মানুষের প্রাণ বাচানো সম্ভব হয়েছে। ১৯৯৯ সালের ওড়িশার সুপার সাইক্লোনে ১০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন। এখন খুব শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লেও মৃতের সংখ্যা ডাবল ডিজিটের মধ্যে থাকছে। তবে মৃতের সংখ্যা শূন্য করাই আমাদের লক্ষ্য। সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতিও আরও কমানো যাবে যদি গ্রামীণ এলাকায় পাকা ঘরবাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

You May Also Like