শ্মশান থেকে বলছি

1 min read

সত্যির নিজস্ব অভিশাপ আছে, আদিম ও অন্ধকার। গুপ্তঘাতকের মতো অভিশাপ পিছু নেয়, আপ্রাণ ঢেকে রাখার চেষ্টা করি

বাবার মুখাগ্নির সময় নেশা করেছিলাম খুব, আত্মদংশনের মুখোমুখি হবার আতঙ্কে। তবু, দারুণ মিথ্যের চটকে লোকসমক্ষে বলে বেরাই, সে রাতে আমার যাবতীয় কর্মকান্ড ছিল শোক ভুলতে চাওয়ার কারণে। সত্যির অন্ধকার ভয় আমাকে ধূর্ত হতে শেখাচ্ছে। অথচ, এখানে এলে কী করে যেন সমস্ত খোলশ খুলে পরে। দীর্ঘ যাতায়াতের কুঅভ্যেস থেকে জেনেছি, মানুষ পোড়া গন্ধ বাতাসে যেসব মুখ ভেসে আসে তাদের এড়িয়ে যাওয়া কঠিন। সম্ভবত ধরা পড়ে যেতে আসি বারবার। সামান্য নাম উচ্চারণে যে বিষধর প্রেয়সীর সতিত্ব নষ্ট হবার খবর রটে বাজারে, তার ঝলসানো হৃদয়ের জন্য প্রার্থনা করি। আমি নিশ্চিত আমাকে শুয়োরের বাচ্চা বলার মুহূর্তে সে তার জন্মদাতাকে ভেবেছে। আমার বিশ্বাস, তার বহু ব্যবহৃত ভুগোলে এখনও একটি সরু গলি আমার জন্য অক্ষত রাখা আছে

শুকনো গাছকে ফ্রেমে রেখে যেভাবে ঘিরে আসে দিনের শেষ আলো, এমন নরমের বিপরীতে যতটা রুক্ষ্ম ধারণা করা যায়, ঠিক তেমন করে মৃতদেহের পাশে জমাট বাঁধে জীবিতদের ভিড়। কাচা মদের গন্ধ, অযথা কথাবার্তায় স্তব্ধতা ভেঙে যায়। বেঁচে থাকার রহস্য,মগ্নতা,থেকেও না থাকার দ্বন্দ্ব এলোমেলো হতে থাকে। ওই যে শীতে জড়োসড়ো পাগল, ওই যে টাকা গুনতে গুনতে কুয়াশায় মিলিয়ে যাচ্ছে বেশ্যা ও দালাল, মনে হয় ওরা কিছুটা সমাধান জানে। আমি কি সমাধান খুঁজতে আসি? কতটা নিষ্পত্তির কাছাকাছি যেতে চাই? কতটা ফিরতে চাই সাংসারিক ছলনায়! এইসব ভাবনার ভেতর আবার সেই রহস্যময় ‘তুমি’ এসে ঢুকে পড়ে। ‘তুমি’ মানে এক অফুরন্ত অধ্যায়, অনন্ত বয়ে চলা। কিংবা মা নামক বিতর্কিত দহন। কৈশোর থেকে পুষে রাখা তুষের
আগুনে, যে আগুনে পুড়তে আসি রোজ, ভুলতে আসি। পরিত্রাণের মিথ্যে প্রত্যাশায় বসে থাকি চুপ করে

You May Also Like