রায়দিঘি উপকূলে ট্রলারে একসঙ্গে ধরা পড়ল ৫০টি বিরল নড়েভোলা মাছ

দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি উপকূলে এক অভাবনীয় ঘটনায় উৎসবের আমেজ মৎস্যজীবীদের মুখে। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে প্রায় ৫০টি নড়েভোলা মাছ উঠে আসে ‘প্রিয়াঙ্কা’ নামের একটি ট্রলারের জালে। হঠাৎ একসঙ্গে এত সংখ্যক নড়েভোলা ধরা পড়ায় প্রথমে মৎস্যজীবীরাই হতবাক হয়ে যান। ট্রলারের মাঝিরা জানান, জালে আরও অনেক নড়েভোলা উঠেছিল। তবে জাল অতিরিক্ত ভারী হয়ে যাওয়ায় কয়েকটি মাছ জাল থেকে ছিটকে যায়। তবুও ধরা পড়া মাছের সংখ্যা সকলকে অবাক করেছে। মাছগুলি প্রথমে রায়দিঘি ঘাটে আনা হয়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই কৌতূহলী মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করে। বিরল এই মাছ দেখার জন্য স্থানীয়দের মধ্যে বিশেষ আগ্রহ দেখা যায়। পরে মাছগুলি সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার মৎস্য আড়তে। আড়তের ব্যবসায়ীরা মাছগুলির নিলাম করে ও শেষ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকায় তা বিক্রি হয়। এই বিরল প্রজাতির মাছ বাজারে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হওয়ায় দামও বেশ চড়া। মৎস্য ব্যবসায়ীদের দাবি, নড়েভোলা মাছের চাহিদা শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও রয়েছে। ফলে এমন মাছ একসঙ্গে এত সংখ্যায় ধরা পড়া মৎস্যজীবীদের কাছে এক বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। রায়দিঘির স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সমুদ্রের অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রতিদিন জীবন বাজি রেখে মাছ ধরতে যায় জেলেরা। কিন্তু প্রতিদিন ভাগ্য তাঁদের সহায় হয় না। এদিনের এই বিরল মাছ ধরা তাঁদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এক মৎস্যজীবীর কথায়, “এতগুলো নড়েভোলা একসঙ্গে ধরতে পেরে দারুণ খুশি। সংসারের টানাটানি অনেকটাই কমে যাবে। সারা মৌসুমে এ রকম মাছ যদি আরও ধরা পড়ে, তবে জীবনে স্বস্তি আসবে।” ফলে এই ঘটনা শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকেই নয়, মানসিকভাবেও উচ্ছ্বাস এনে দিল রায়দিঘির মৎস্যজীবীদের মনে। মাছগুলি বিক্রির টাকা ভাগ করে নেওয়ার পর প্রত্যেকেরই প্রাপ্তি হবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।