শিলিগুড়ির পর এবার ভারত নেপাল সীমান্ত দিয়ে নারী পাচারের ছক

নেপাল থেকে ৬ তরুণী এবং এক নাবালিকাকে পাচার করা হচ্ছিল হংকংয়ে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এসএসবি ছয় তরুণী এক নাবালিকা এবং দুই নারী পাচারকারীকে আটক করে। একটি গোপন সূত্রের নির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে, ভারত নেপাল সীমান্তে মোতায়ন ৪১তম ব্যাটালিয়নের ‘সি’ কোয় পানিট্যাঙ্কির QRT ২ জন নারী পাচারকারীকে আটক করে এবং ৭ জন নেপালি মেয়েকে উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া মেয়েদের মধ্যে ৬ জন তরুনী একজন নাবালিকা। তারা প্রত্যেকেই নেপালের বাসিন্দা। এই ঘটনায় ধৃতদের নাম দীপেশ গুরুং, তার বাড়ি নেপানিয়া, তোরিবাড়ি, বেলগাছি, দার্জিলিং এ। অপর ধৃতের নাম জাপান গুরুং, বাড়ি শঙ্খুয়াসভা, নেপাল। জাপান মূলত নারী পাচারের কারবার চালায় বলেই জানিয়েছে এসএসবি। ধৃত নেপালের বাসিন্দা জাপান এবং দার্জিলিং এর বাসিন্দা দীপেশ একটি বড় চক্রে শামিল রয়েছে বলেই মনে করছে এস এস বি। উদ্ধার হওয়া ৬ তরুণীকে ও এক কিশোরীকে বিদেশে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ধৃতরা।

ধৃত ২ পাচারকারীরা উদ্ধার হওয়ার ৬ তরুনীর এবং এক নাবালিকার জাল নথি তৈরি করে তাদের আধার, প্যান কার্ড এবং পাসপোর্ট তৈরির জন্য ভারতে নিয়ে আসছিল। এবং তাদের নিয়ে আসার কথা ছিল শিলিগুড়িতে। তাদেরকে নেপাল থেকে শিলিগুড়িতে নিয়ে আসার পর প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র প্রস্তুত করার পর, ঐ ৬ তরুণীকে এবং এক নাবালিকাকে হংকংয়ে পাঠানো হত। এসএসবি ধৃত দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং উদ্ধার হওয়া ৬ তরুণীকে ও নাবালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে তাদের পরিবারের কাছ থেকে ধৃত দুইজন ভারতীয় মুদ্রার ৩ লক্ষ টাকা করে বিদেশে চাকরির জন্য নিয়েছে। এস এস বি সূত্রে জানা গিয়েছে এই উদ্ধার হওয়া সাতজন নারীর আধার কার্ড, প্যান কার্ড এবং পাসপোর্ট তৈরির জন্য শিলিগুড়িতে আনা হচ্ছিল। এবং পাচারকারীরা ৭ জন নেপালি মেয়েকে হংকং পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল। ধৃতদের মোবাইলে প্রচুর তরুণীদের ছবি এবং তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গিয়েছে ধৃত ২ জন পানিট্যাঙ্কির রতন বর্মণের সাথে যোগাযোগ করেছিল যে সমস্ত জাল নথি তৈরি করে। এসএসবির হাতে ধৃত হয়েছে দীপেশ গুরুং সে পেশায় ট্যাক্সি ড্রাইভার।

তার প্রধান কাজ ছিল নেপাল সীমান্ত থেকে সমস্ত তরুণীদের সংগ্রহ করা এবং তাদের শিলিগুড়িতে নিরাপত্তার সাথে নিয়ে যাওয়া। যেখান থেকে এই তরুণীদের পাচারের পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হত। এস এস বি ধৃত ২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে গত ২-৩ বছর ধরে এই কাজটি করে আসছে দীপেশ এবং জাপান। দীপেশ এবং জাপান একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে এই চক্র চালাত। ধৃত ট্যাক্সিচালক দীপেশ গুরুং জানিয়েছে, জাপান গুরুং এর আগেও অনেক নেপালি মেয়েকে দিল্লি, আসাম এবং ভারতের অন্যান্য অংশে নিয়ে গেছে। ধৃত দুই নারী পাচারকারী এবং উদ্ধার ৬ তরুণীর পাশাপাশি এক নাবালিকাকে এসএসবি  দার্জিলিং জেলা পুলিশের খড়িবাড়ি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এই ঘটনায় যে গাড়িতে করে তরুণী এবং কিশোরীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেই গাড়িটি আটক করেছে এস এস বি। সেই গাড়িটিও পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে এস এস বি। খড়িবারী থানার পুলিশ নেপালী ওই তরুণী এবং নাবালিকাদের পরিবারকে খবর দিয়েছে। প্রত্যেককে তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। শিলিগুড়ি আদালতের নিয়ম মেনে শনিবার এই প্রক্রিয়া হবে বলেই জানা গিয়েছে। অপরদিকে ধৃত জাপান এবং দীপেশ গুরুংকে আজ শিলিগুড়ি আদালতে পেশ করা হবে।