অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বেহাল দশা! সংস্কারের দাবিতে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী

তুফানগঞ্জ – ২ ব্লকের শালবাড়ি এলাকার ১০৪ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র যেন প্রশাসনের নজরবিহীন এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শিশুদের ভবিষ্যৎ গড়ার জায়গায় এখন বৃষ্টির জল আর ঝলসানো রোদের সাথে চলছে যুদ্ধ। ছাউনির অসংখ্য ফুটো দিয়ে প্রবেশ করা বৃষ্টির জলে ভিজে যাচ্ছে মিড-ডে মিলের চাল, ডাল ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী। অস্থায়ীভাবে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখলেও তাতেও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না।

কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। শৌচাগারের অবস্থাও এতটাই খারাপ যে, কর্মী ও শিশুদের পাশের বাড়িতে যেতে হচ্ছে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে। রান্নার জন্য একমাত্র সহায়িকা বছরখানেক আগে অবসর নেওয়ার পর থেকে বর্তমানে একমাত্র কর্মীকেই রান্না, খাওয়া ও পড়ানোর সমস্ত দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে।

শালবাড়ি কেন্দ্রের কর্মী গৌতমী ভদ্র দাস জানান, টিনের ছাউনি প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। রোদে শিশুদের পড়ানো সম্ভব হয় না, আর বৃষ্টিতে জল জমে থাকে ঘরের ভিতরে। কাজ চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় গৃহবধূ ভানুমতি বাড়িয়া জানান, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুর বসার মতো উপযুক্ত পরিবেশও নেই। অনেক অভিভাবক বাধ্য হয়ে গাছতলায় বসে থাকেন। অন্য গৃহবধূ জোসনা দাস বলেন, “কেন্দ্রটিতে পানীয় জল নেই, বিদ্যুৎ নেই, শৌচালয়ও ব্যবহারের অযোগ্য। প্রশাসন যদি তৎপর না হয়, তাহলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।”

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি বাম আমলে স্থাপিত হলেও গত ছয় বছর ধরে সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন, এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের। শিশুর সংখ্যা ৬০ হলেও নেই প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো, নেই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ।

এই প্রসঙ্গে তুফানগঞ্জ-২ ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শীতল দাস বলেন, “কেন্দ্রটি সংস্কারের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বিডিও দালাকি লামা জানিয়েছেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন, আর কতদিন শিশুদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলবে এই অব্যবস্থা? প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কবে মিলবে?