ভিটামিনের অভাব ওষুধ খেয়ে মেটাচ্ছেন? সতর্ক না হলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না

দেহকে সুস্থ-সবল রাখতে প্রয়োজন যথাযথ পুষ্টির। শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ মূলত খাবারের মাধ্যমেই আমাদের দেহে প্রবেশ করে। কিন্তু ব্যস্ত জীবনযাত্রায় অনেক সময়েই শুধুমাত্র খাবারের মাধ্যমে দৈনিক নির্ধারিত পুষ্টি পাওয়া যায় না। তাই শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজের ঘাটতি মেটাতে অনেকেই নিয়মিত সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করেন। কিন্তু সতর্ক না হলে, এই ধরনের প্রবণতা বিপদের কারণ হতে পারে।

কখন সাপ্লিমেন্ট

আধুনিক জীবনযাত্রায় শুধুমাত্র খাবার থেকে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়ার অভাব মেটানোর জন্য অনেকে সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করেন। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বললেন, ‘‘ম্যাক্রোর (প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট) তুলনায় মাইক্রো (আয়রন, ক্যালশিয়াম, ভিটামিন ডি প্রভৃতি) পুষ্টি উপাদানের ক্ষেত্রে অভাব বেশি লক্ষ করা যায়।’’ নিরামিষাশীদের ক্ষেত্রে ভিটামিন বি ১২-এর অভাব হওয়াটা স্বাভাবিক। শম্পা বললেন, ‘‘শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে, একটা সময়ে মনে করা হত মাছ, ডিম বা দুধ খেলে ঘাটতি মিটে যাবে। এখন সেটা অনেক সময়েই সম্ভব হচ্ছে না। তখন রোগীকে সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হচ্ছে।’’
বয়স্কদের ক্ষেত্রে সাপ্লিমেন্ট উপকারী। শম্পা জানালেন, ‘‘বয়সের সঙ্গে অনেকেই সব খাবার খেতে পারেন না। তখন সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করলে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি মেটানো যায়।’’

সাপ্লিমেন্ট খাবার নয়

মনে রাখা প্রয়োজন, কোনও সাপ্লিমেন্ট খাবারের অভাব পূর্ণ করতে পারে না। খাবারের মাধ্যমে দেহ তার পুষ্টি সংগ্রহ করবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি বা অসুস্থতার জন্য সেটা সম্ভব হচ্ছে না, তাঁরা অবশ্যই সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করতে পারেন।

সতর্কতার প্রয়োজন

যেকোনো ভিটামিন বা প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার আগে পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। শম্পা বললেন, ‘‘কারও ত্বক ধরা যাক খসখসে হয়ে যাচ্ছে। তিনি ভিটামিন ও খেতে শুরু করলেন! যে কোনও সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত।’’
যাঁরা জিমে যান, তাঁদের মধ্যে অনেকেই দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর জন্য সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করেন। কিন্তু না জেনেই হঠাৎ করে প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়া শুরু করলে কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। শম্পার কথায়, ‘‘‘হু’ (ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন)-এর মানদণ্ড অনুসারে খেলোয়াড় বা বডিবিল্ডার ছাড়া এক জন প্রাপ্তবয়স্কের দেহে দৈনিক ১২৫ গ্রামের বেশি প্রোটিন প্রবেশ করা উচিত নয়। এ বার কেউ লাগাতার সাপ্লিমেন্ট খেতে থাকলে তখন সমস্যা শুরু হয়।’’