ভয়ংকর আবহাওয়ায় থমকে গেল শৃঙ্গ জয়ের চেষ্টা

অদম্য সাহস আর অটুট দলগত সংহতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল উত্তরবঙ্গের ছয়টি অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবের যৌথ পোলোগংঙ্কা অভিযান। ভয়াবহ আবহাওয়ার মধ্যেও অভিযাত্রীরা সফলভাবে পোলোগংঙ্কা পর্বত শৃঙ্গের প্রায় ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় পৌঁছায়, যদিও শেষপর্যন্ত প্রবল তুষারপাত ও ঝোড়ো হাওয়ার কারণে শৃঙ্গ জয়ের আগেই ফিরে আসতে বাধ্য হন তাঁরা।

গত ৭ জুলাই অভিযান শুরু করে ১১ সদস্যের এই দলটি ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় বেস ক্যাম্প স্থাপন করে। তারপর ১০ জুলাই প্রথম শিবির (১৭,৫০০ ফুট) ও ১১ জুলাই দ্বিতীয় শিবির (১৯,৫০০ ফুট) স্থাপন করা হয়। দলের সদস্য হীরক ব্রহ্ম অসুস্থ হয়ে পড়ায়, ড. স্বরূপ খান ও সুস্মিতা সরকার বেস ক্যাম্পে থেকে যান তাঁর সেবায়।

১৩ জুলাই ভোর সাড়ে ৪টেয় আট সদস্য ও দুইজন গাইড পোলোগংঙ্কা শৃঙ্গের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। সন্ধ্যে থেকে আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করলেও, তাঁরা এগিয়ে চলে কঠিন বরফের দেয়াল ও পাথরের খাঁজ বেয়ে। কিন্তু প্রায় ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় প্রবল তুষারপাত ও হাওয়ার দাপটে অভিযান স্থগিত করতে বাধ্য হন। প্রায় ৩০ মিনিট সেই ঢালে দাঁড়িয়ে থাকলেও আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়ায় ক্যাম্প টু-তে ফিরে আসে অভিযাত্রীরা।

১৪ জুলাই ভোরে আবার শৃঙ্গ জয়ের নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হয়। দলনেতা ভাস্কর দাস একটি তিন সদস্যের দল গঠন করে – ত্রিদিব সরকার, জয়ন্ত সরকার ও পিয়ালী বিশ্বাস। তাঁদের সঙ্গে ছিলো দুই গাইড। বাকিরা ক্যাম্প ওয়ান হয়ে বেস ক্যাম্পে ফিরে আসে। কিন্তু ১৪ জুলাইও আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়ায় তৃতীয় চেষ্টাও ভেস্তে যায়। সেই দিনই অবশিষ্ট সদস্যরাও নিচে নেমে আসে।

এদিন, ১৫ জুলাই, দলটি মানালির উদ্দেশে রওনা দিয়েছে সাথে সকলেই সুস্থ রয়েছে বলে জানা গেছে।

এই অভিযান শুধু একটি পর্বতারোহণ নয় – বরং ছিল এক যৌথ স্বপ্নকে বাস্তবায়নের প্রয়াস। একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে, সীমাহীন প্রতিকূলতার মুখে একসাথে লড়াই করার এই সাহসিকতা উত্তরবঙ্গের অভিযাত্রা ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনা করল। ভবিষ্যতে এমন যৌথ অভিযানে আরও রঙ ছড়াবে বলে আশাবাদী সব অভিযাত্রী।