ব্যতিক্রম আয়োজিত ‘ব্যতিক্রম এডুকেশন কনক্লেভ ৩.০’ ১৭ই মে নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরের লতিকা সিনেমা হলে সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই ব্যতিক্রমী সংস্থা যার লক্ষ্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে মেলবন্ধন সৃষ্টি করা এবং শিক্ষার্থী ও নতুন প্রজন্মদের সুচিন্তিত ক্যারিয়ার পছন্দের দিকে পরিচালিত করা। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী এই কনক্লেভ অঞ্চলজুড়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, নীতিনির্ধারক এবং সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা একত্রিত হন। ‘ব্যতিক্রম এডুকেশন কনক্লেভ ৩.০’-এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল লা গণেশন। শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুভারম্ভ হয়। নাগাল্যান্ডের সমৃদ্ধ লোকসংস্কৃতি প্রদর্শনে এই অনুষ্ঠানটিকে এক অন্যান্য মাত্রা দেয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল লা গণেশন বলেন, “এই মঞ্চে ছাত্র-ছাত্রীর ভবিষ্যৎ এবং শিক্ষার গুরুত্ব, মাতৃভাষা সংরক্ষণ এবং যুব সমাজের দায়িত্ব নিয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমি অংশ নিতে পেরে গৌরবান্বিত হয়েছি। ডিমাপুরের এই অনুষ্ঠানে আমি মনে করি শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষা শেখার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা দরকার”। তিনি আরোও বলেন, মাতৃভাষায় দক্ষতা অর্জন করা শিশুদের অন্যান্য ভাষা শেখার ভিত্তি গড়ে তোলে এবং এটি তাদের শিক্ষাজীবনে সহায়ক হয়। তিনি জাতীয় শিক্ষা নীতি (NEP) 2023-এর সফল বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের আহ্বান জানান।
আজকের তরুণ প্রজন্মের দিক নির্দেশনা, দক্ষতা এবং অনুপ্রেরণার তীব্র প্রয়োজন। সঠিক ক্যারিয়ার নির্বাচন করা কেবল একটি চাকরির বিষয় নয়, এটি একটি উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবন গড়ে তোলার বিষয়। এই সম্মেলন যুবসমাজকে সচেতন সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিকে পরিচালিত করে নতুন পরিবর্তন আনবে। বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির জাতীয় সহ-সভাপতি এবং Marcofed-এর চেয়ারম্যান বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি ড° এম চুবা আও, দ্যা টাইমস অফ ইন্ডিয়ার মানস গগৈ, জে আই এস-এর কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স সুনীল কুমার, নেপানি’র রাশিদা বেগম, নাগাল্যান্ডের ভারত সেবাশ্রম সংঘের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বামী চিন্মায়ানন্দ জি, ওনলি সেফের অমিতাভ দত্ত, সেন্ট মেরিস উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রশাসক প্রতীক দত্ত, উদ্যোক্তা নরেশ জৈন, আনন্দ আয়র, ড° সৌমেন ভারতীয়া প্রমুখ। ব্যতিক্রমের পৃষ্ঠপোষক ড° সৌমেন ভারতীয়া বলেন, “ব্যতিক্রম শিক্ষা কনক্লেভর এই মঞ্চ শুধু একটি কনক্লেভ নয়, এটি হ’ল একটি মিলনস্থল, যেখানে আমরা ভিন্ন ভিন্ন রাজা থেকে এসে একত্রিত হয়েছি। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে, একে অপরের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে। অসমের এক প্রান্ত থেকে এসে নাগাল্যান্ডের এই শহরে দাঁড়িয়ে আমরা অনুভব করছি, শিক্ষা কেবল পাঠ্যবইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি চলমান যাত্রা- এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে, এক সংস্কৃতি থেকে আরেক সংস্কৃতিতে প্রবাহমান। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, এই আন্তঃরাজ্য বিনিময়ের সুযোগগুলো আরও বিস্তৃত করা। আমরা চাই ছাত্র-ছাত্রীরা ‘ব্যতিক্রম এডুকেশন কনক্লেভ ৩.০’-এর মাধ্যমে নিজেদের রাজ্যের বাইরেও স্বপ্ন দেখতে শিখুক-
তারা জানুক, শিক্ষা মানেই শুধু পরীক্ষার নম্বর নয়, বরং একটি ব্যক্তিত্ব গঠনের অবিচ্ছেদ্য অংশ”।
ড° এম চুবা আও ব্যতিক্রমের প্রশংসা করার সঙ্গে বলেন, “আজ নাগাল্যান্ডের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি প্রদর্শিত হতে দেখে আমি গর্বিত। এই কনক্লেভ আমাদের সেই সুযোগ দিয়েছে, যেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি কিভাবে বিভিন্ন রাজ্যের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এক ছাতার নিচে এসে নিজের অভিজ্ঞতা, চ্যালেঞ্জ এবং মতামত ভাগ করে নিয়েছেন। আসুন আমরা একসাথে প্রতিজ্ঞা করি, আমাদের ছাত্র-ছাত্রী শুধুমাত্র একজন ভালো পেশাজীবী নয়, বরং একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলব”। স্বামী চিন্ময়ানন্দ জী বলেন, “শিক্ষার সঙ্গে আমাদের আধ্যাত্মিক বিকাশও খবুই জরুরী”।