মেয়ো রোডে তৃণমূলের ‘ভাষা আন্দোলনের’ মঞ্চ খুলে দেওয়ায় প্রতিবাদে সরব মুখ্যমন্ত্রী, মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে কর্মসূচির ডাক

কলকাতা, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ — কলকাতার মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘ভাষা আন্দোলন’ কর্মসূচির মঞ্চ সেনাবাহিনীর তরফে খুলে দেওয়ার ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনাকে “অগণতান্ত্রিক ও প্রতিহিংসামূলক” বলে অভিহিত করেছেন এবং এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন।

তৃণমূলের দাবি, বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের উপর ‘অত্যাচার’ এবং ‘বিভাজনের রাজনীতি’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এই মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। প্রতি শনিবার ও রবিবার শান্তিপূর্ণ ধর্না কর্মসূচি চলছিল। তবে সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়, নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম করায় এবং অনুমতি লঙ্ঘন হওয়ায় মঞ্চ ও ব্যারিকেড সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং সরাসরি অভিযোগ করেন, “আমাদের মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, মাইকের কানেকশন কেটে দেওয়া হয়েছে। সেনাকে দিয়ে প্যান্ডেল খুলিয়েছে। আমার সেনার বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই, আমরা সেনাকে সম্মান করি। কিন্তু সেনা যদি বিজেপির কথায় চলে, তাহলে দেশ কোথায় যাচ্ছে তা ভাবার বিষয়”।

তিনি আরও বলেন, “আমরা অনুমতি নিয়েই মঞ্চ তৈরি করেছিলাম। যদি কোনও আপত্তি থাকত, আমাদের জানালে আমরা নিজেরাই খুলে দিতাম। কিন্তু এভাবে আচমকা ভাঙা অনৈতিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত”।

তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির রাজনৈতিক ইন্ধন রয়েছে। দলীয় নেতারা বলেন, এটি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির উপর আক্রমণ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যকে অপমান করার চেষ্টা।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে। তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছে, প্রতিটি ব্লক, শহর ও জেলা স্তরে প্রতিবাদ সভা ও মিছিলের আয়োজন করা হবে, যাতে সাধারণ মানুষও এই ‘ভাষা অবমাননার’ বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে পারেন।

এই ঘটনার মাধ্যমে রাজ্যে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক, সেনার ভূমিকা এবং ভাষা-পরিচিতি নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধু একটি মঞ্চ সরানোর ঘটনা নয়, বরং বৃহত্তর সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বার্তা বহন করছে।