তিলপাড়া সেতুতে ফাটল: বিচ্ছিন্ন উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ

আজ ভোর ৬টা নাগাদ বীরভূম জেলার তিলপাড়া ব্যারেজের ওপর অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ সেতুটিতে একটি বড় ফাটল দেখা দেয়। এই ফাটলের কারণে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের সড়কপথে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের ফলে সেতুটির ওপর দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে এবং জরুরি পরিষেবার ওপরও এর প্রভাব পড়ছে।

আজ সকালে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা প্রথম সেতুতে ফাটলটি লক্ষ্য করেন এবং দ্রুত প্রশাসনকে খবর দেন। খবর পেয়ে পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রাথমিক পরিদর্শনে দেখা যায়, সেতুর মাঝখানে প্রায় ৩ ফুট লম্বা এবং ২ ইঞ্চি গভীর একটি ফাটল তৈরি হয়েছে। ফাটলের কারণে সেতুর কিছু অংশ দেবে গেছে এবং কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে।

বীরভূমের জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন। জনসাধারণের নিরাপত্তার স্বার্থে সেতুটির ওপর দিয়ে সমস্ত ধরনের যান চলাচল তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কলকাতা-শিলিগুড়ি রুটে চলাচলকারী সমস্ত বাস এবং মালবাহী ট্রাকগুলিকে বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনার কারণে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। এর ফলে জরুরি পণ্য পরিবহন, কৃষিপণ্য এবং সাধারণ যাত্রীদের ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বহু বাস ও ট্রাক সেতুর দুই পাশে আটকা পড়ে আছে। প্রশাসন জানিয়েছে, সেতুটি মেরামতের কাজ শুরু হতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।

পূর্ত দপ্তরের একজন সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের মতে, দীর্ঘদিনের পুরোনো সেতুটিতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের কারণেই এই ফাটল দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, “সেতুটির মেরামতের জন্য একটি বিশদ পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে, ফাটলটি দ্রুত মেরামত করে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হবে। তবে সম্পূর্ণ মেরামতের জন্য হয়তো আরও সময় লাগবে।”

সেতুর কাছে আটকা পড়া এক বাসযাত্রী বলেন, “আমরা আজ সকাল থেকে এখানে আটকে আছি। আমাদের গন্তব্যে পৌঁছতে কত দেরি হবে, তা কেউ বলতে পারছে না। এতে আমাদের অনেক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।”

তিলপাড়া সেতুর এই ফাটল কেবল একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং রাজ্যের সড়ক অবকাঠামোর দুর্বলতার একটি ইঙ্গিত। সরকারের উচিত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সেতুগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজনে পুরোনো সেতুগুলি পুনর্নির্মাণ করা। এই ঘটনার ফলে মানুষের ভোগান্তি কমাতে প্রশাসনকে আরও দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।