ছাত্র-ছাত্রীদের বিজ্ঞানমুখী করে তুলতে ডাক্তার ও শিক্ষিকাদের প্রচেষ্টা

রায়গঞ্জের উদয়পুরের ছবি ঘর বা বিজ্ঞান পার্কে পা ফেললে মনে পড়ে যায় রবীন্দ্রনাথের স্ফুলিঙ্গের সেই বিখ্যাত কবিতা ‘একটি শিশির বিন্দু।”

বহু দিন ধ’রে, বহু ক্রোশ দূরে

            বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে

দেখিতে গিয়েছি পর্ব্বতমালা

                     দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।

             দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

         ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া

 একটি ধানের শিষের উপরে

                   একটি শিশির বিন্দু।।

বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্রই পঠন-পাঠনের পাশাপাশি রয়েছে শিক্ষামূলক ভ্রমণের সুযোগ। আর সেই সুযোগেই শিক্ষক শিক্ষিকারা ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ফি বছর বেরিয়ে পড়েন দেশ ভ্রমণে। কখনো দীঘা, কখনো পুরী, কখনো বা চেন্নাইয়ের সৈকত, কখনো দার্জিলিং, কখনো সিকিম, কখনো বা মানালি। কখনো ঝিনুক-নুরী, পাথর- ফসিল, কখনো বা অচেনা অজানা গাছ পাতার খোঁজে সাগর থেকে পাহাড়ে। অথচ ঘরের কাছে রায়গঞ্জের উদয়পুর বিজ্ঞান পার্কে রয়েছে একদম হাতে-কলমে বিজ্ঞান শিক্ষার উপকরণ।

কোথাও অংক, কোথাও পদার্থবিদ্যা, কোথাও জীবন বিজ্ঞান তো কোথাও সমাজবিজ্ঞান আবার কোথাও বা ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে বিজ্ঞানের খেলা। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ অশোক দত্ত ও তার স্ত্রী শিক্ষিকা সংহিতা দত্ত নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞান চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে আড়াই বিঘা জমির ওপর সৃষ্টি করেছেন এই বিজ্ঞান পার্ক বা ছবিঘর। ছাত্র -ছাত্রীদের জন্য সম্পূর্ণ বিনা খরচে হাতে কলমে বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবস্থা, শুধু তাই নয় আছে শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য রকমারি খেলার ব্যবস্থা।

শিক্ষামূলক ও ভ্রমণের অঙ্গ হিসেবে সারাদিন এই পার্কে গল্প গানের মাধ্যমে বিজ্ঞানের টুকিটাকি শিখে সমৃদ্ধ হতে পারেই ছাত্র-ছাত্রীরা। সম্প্রতি রায়গঞ্জের হাতিয়া হাই স্কুল থেকে একদল ছাত্রছাত্রী নিয়ে শিক্ষকরা শিক্ষামূলক ভ্রমণে গিয়েছিলেন এই বিজ্ঞান পার্কে। ভ্রমণ শেষে ছাত্রছাত্রীরা জানালেন এতদিন বইয়ে পড়েছি, যতটা মুখস্ত হয়নি, আজ একদিনেই হাতে-কলমে দেখে সব মুখস্ত হয়ে গেল। আর বই খুলে পড়তে হবে না।