দুর্গাপুজোর দিনগুলোতে তাঁদের বাদ্যেই শুরু হয় উৎসব, তাঁদের ঢাকের তালে মেতে ওঠে সমগ্র বাঙালি সমাজ। কিন্তু সেই ঢাকিদের জীবন যেন উৎসবের বাইরে থেকে যায় অনিশ্চয়তায় ঢাকা।
প্রতি বছরের মতো এবছরও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের বহু ঢাকি পাড়ি দিচ্ছেন বিদেশে। কানাডা, দুবাই, সিঙ্গাপুরে দেশে তাঁদের চাহিদা প্রচুর। কারণ, বিদেশে থাকা বাঙালি সংগঠনগুলো দুর্গাপুজোকে ঘিরে ঢাকিদের আমন্ত্রণ জানায়। ঢাকিদের মতে, “পুজোর কয়েকটা দিনই আমাদের ভরসা। সেই সময়েই বেশি রোজগারের আশায় বিদেশে যেতে হয়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা পরিবারকে ছেড়ে যেতে চাই।”
তাঁদের অভিযোগ, সরকার প্রায় সব ক্ষেত্রেই শিল্পী-কারিগরদের জন্য বিভিন্ন ভাতা বা অনুদান চালু করলেও ঢাকিরা এখনও সেই সুবিধার বাইরে। এক ঢাকি ক্ষোভের সুরে বলেন, “আমাদের যদি সরকারি ভাতার সুযোগ থাকত, তাহলে হয়তো বিদেশে পরিবার ছেড়ে যেতে হতো না।”
স্থানীয় সাংস্কৃতিক মহল মনে করে, ঢাক শুধু একটি বাদ্যযন্ত্র নয়, বরং বাংলার চিরন্তন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক। অথচ সেই ঐতিহ্যের বাহকদের জীবিকা এখনও অনিশ্চিত। পুজোর কয়েক দিনের আনন্দের পর সারাবছর চলে অস্থিরতা, কাজের অভাব আর দুশ্চিন্তা।
উৎসবের ভিড়ে যখন ঢাকের বাজনা মানুষের আনন্দ বাড়ায়, তখন ঢাকিদের বুকের ভেতর জমে ওঠে অজানা নিরাপত্তাহীনতা। একদিকে বিদেশে রোজগারের হাতছানি, অন্যদিকে পরিবার ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট—এই দ্বন্দ্বই যেন ঢাকিদের জীবনকথা।
