শিলিগুড়িতে গণেশ পুজো উপলক্ষ্যে থিম প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জায় উৎসবের আমেজ

উত্তরবঙ্গের বাণিজ্যকেন্দ্র শিলিগুড়ি এখন উৎসবের আবহে মেতে উঠেছে। দুর্গাপুজোর আগে শহরজুড়ে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী সিদ্ধিদাতা গণেশের পুজো। মুম্বই–পুনের ধাঁচে এই পুজো গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ বছর সেই জনপ্রিয়তা আগের তুলনায় আরও বেশি চোখে পড়ছে। শহরের অলিগলি থেকে বড় বড় বাণিজ্যিক সংগঠন সবখানেই চলছে গণেশ আরাধনার ধুম।

থিম প্যান্ডেল, টাক লাগানো আলো ও নতুনত্বের ছোঁয়া শহরের বিভিন্ন বারোয়ারি পুজো কমিটি দুর্গাপুজোর অনুকরণে থিম প্যান্ডেল তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, টাক লাগানো আলোকসজ্জা ও নানান শৈল্পিক সাজে সেজে উঠেছে পুজোমণ্ডপগুলো। সন্ধ্যা নামলেই ঝলমল করা আলোতে শহরের রাস্তাঘাট ভরে উঠছে উৎসবের আবহে। দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়ছে প্রতিটি মণ্ডপে।

মঙ্গলবার রাতে একাধিক পুজোর উদ্বোধন করে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব ও ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার। বুধবার চতুর্থীতে শহরের বিভিন্ন মন্দিরে ভক্ত-অনুরাগীরা ভিড় জমান গণেশ পুজো উপলক্ষে। শুধু মন্দির নয়, শহরের নানা দোকানেও লক্ষ্মীপুজোর পাশাপাশি গণেশ পুজোর আয়োজন করা হয়েছে।

দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে। যানজট এড়াতে ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে বিশেষ ট্রাফিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাশাপাশি উৎসব চলাকালীন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগও কড়া নজরদারিতে রয়েছে বলে জানা গেছে ।

পাশাপাশি, শহরের বারোয়ারি গণেশ পুজো কমিটিগুলো দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে অভিনব থিম বেছে নিয়েছে। কোথাও দুর্গাপুজোর ধাঁচে সাজানো হয়েছে মণ্ডপ, কোথাও বা আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় তৈরি করা হয়েছে শিল্পকর্ম। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সব বয়সের মানুষই ভিড় জমাচ্ছে এই উৎসবের আমেজ উপভোগ করতে।

কার্যত, উৎসবের রঙে রঙিন শিলিগুড়ি প্রতিবছরই শিলিগুড়িতে গণেশ পুজোর আয়োজন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক সময় যা সীমাবদ্ধ ছিল নির্দিষ্ট কিছু সংগঠনের মধ্যে, এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। এ বছর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে গণেশ আরাধনার যে আয়োজন দেখা যাচ্ছে, তা কার্যত দুর্গাপুজোর সমান্তরাল উৎসবে পরিণত হয়েছে।

ভক্ত-অনুরাগীদের ভিড়, থিম-ভিত্তিক প্যান্ডেল, ঝলমলে আলোকসজ্জা ও শৃঙ্খলাপূর্ণ আয়োজনে শিলিগুড়ির গণেশ পুজো এখন উত্তরবঙ্গের অন্যতম বড় উৎসব। শুধু শহরের বাণিজ্যকেন্দ্রই নয়, পর্যটনকেন্দ্র হিসেবেও এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে দিন দিন।

নিঃসন্দেহে বলা যায়, গণেশ পুজো এখন শিলিগুড়ির সংস্কৃতির এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা আগামী দিনে আরও বৃহৎ আকার ধারণ করবে বলে ধারণা করা যায়।