লাদাখের দুর্গম পর্বতমালায় মানুষের পদচিহ্ন না পড়া দুটি অজানা শৃঙ্গ জয় করে ফিরেছেন শিলিগুড়ির গণেশ সাহা, ব্যারাকপুরের কল্যাণ দেব, মালবাজারের সুদেব রায় এবং কাজল কুমার দত্ত। এই অভিযানের আয়োজন করেছিল হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন (ন্যাফ)। দীর্ঘ ১৬ বছর পর এত বড় অভিযাত্রার আয়োজন করে সংস্থাটি। অভিযাত্রীদের লক্ষ্য ছিল ৬২০৫ মিটার ও ৬১৫০ মিটার উচ্চতার দুটি শৃঙ্গ জয়। তাঁদের দাবি, এর আগে এই শৃঙ্গগুলিতে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযান হয়নি। একটি শৃঙ্গ একেবারেই অনাদৃত, অপরটিতে হয়তো কেউ গিয়েছিলেন, তবে তার কোনও নথি নেই।
ফলে এই জয়কে তাঁরা এক নতুন ইতিহাস বলে মানছেন। ৩১ জুলাই রাতে শিলিগুড়ি থেকে যাত্রা শুরু করেন চার অভিযাত্রী। ট্রেনে দিল্লি, বাসে মানালি হয়ে পৌঁছন লাদাখে। সেখান থেকে শুরু হয় প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে লড়াই করে দীর্ঘ ট্রেকিং। অবশেষে ৯ আগস্ট প্রায় ১২ ঘণ্টার কঠিন প্রচেষ্টায় জয় করেন অজানা শৃঙ্গ। অভিযাত্রী গণেশ সাহা বলেন, “অজানা শৃঙ্গে ওঠার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো অনিশ্চয়তা। কী ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ অপেক্ষা করছে আগে থেকে বলা যায় না।
সেখানেই লুকিয়ে থাকে রোমাঞ্চ আর দায়িত্ব।”অভিযান চলাকালীন ঝড়-বৃষ্টি, পাহাড়ি ধস, এমনকি শৃঙ্গজয়ের দিনে তীব্র জলাভাবের মতো সমস্যার মুখে পড়তে হয় তাঁদের। ফিরে আসার সময়ও পাহাড়ি ধসে ৩৬ ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়েছে। শৃঙ্গদুটি অবস্থিত লাদাখের মনোরম পুগা ভ্যালির কাছে। অভিযাত্রীদের মতে, এটি শুধু দুটি শৃঙ্গ জয় নয়, বরং সাহস, অধ্যবসায় ও মানসিক দৃঢ়তার জয়। বাংলায় ফিরে তাঁরা জানিয়েছেন, “আমরা জয় করেছি শুধু পাহাড় নয়, জয় করেছি নিজেদের সীমাবদ্ধতা।”তাঁদের এই কৃতিত্ব বাংলার গর্বকে আরও এক ধাপ উঁচুতে তুলে দিল।
