ভূত বাংলোয় পরিণত ছাত্রাবাস, পুনরায় চালুর দাবি গঙ্গারামপুরবাসীর

বছরের পর বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার ফলে এক রকম ভূত বাংলোয় পরিণত হয়েছে গঙ্গারামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের ছাত্রাবাস। রাতে ওই এলাকায় বাড়ছে অসামাজিক কার্যকলাপ। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রাবাসটি পুনরায় চালুর দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখযোগ্যভাবে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গঙ্গারামপুর উচ্চ বিদ্যালয়। এবছরও মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে সপ্তম স্থান অর্জন করেছে এই বিদ্যালয়ের এক ছাত্র। বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের ছাত্ররা আগে ছাত্রাবাসে থেকে লেখাপড়া করত।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাহুল দেব বর্মন বলেন, “ছাত্রাবাসটি বহু বছর ধরে বন্ধ পড়ে রয়েছে। একসময় ছাত্ররা এখানে থেকে পড়াশোনা করত, কিন্তু ভবনের অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে বৃষ্টিতে ছাউনি দিয়ে জল পড়ত। পরে সরকার নতুন ভবন তৈরি করে দেয়, কিন্তু তা এখনও চালু হয়নি।”

জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে তৎকালীন প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী প্রয়াত নারায়ণ বিশ্বাস ছাত্রাবাস ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ এই ভবনে ২০ জন ছাত্র থাকার ব্যবস্থা, রান্নাঘর, একসঙ্গে ২০ জন বসে খাওয়ার জায়গা এবং শৌচাগার নির্মিত হয়েছিল।

কিন্তু উদ্বোধনের পরে কেটে গিয়েছে প্রায় এক যুগ। তবুও চালু হয়নি ছাত্রাবাসটি। দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত থাকার ফলে এখন সেটি এক প্রকার ভূতুড়ে বাড়ির চেহারা নিয়েছে। এলাকার ছাত্র অরূপ বর্মন জানায়, স্কুলে পড়তে আসি কিন্তু দূর থেকে আসা অনেক ছাত্র থাকার জায়গা পায় না। ছাত্রাবাস থাকলে আমাদের বড় সুবিধা হতো।”

রাত বাড়লেই এই ফাঁকা বিল্ডিং ঘিরে অসামাজিক কার্যকলাপ শুরু হয় বলেও অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

এ বিষয়ে গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “ছাত্রাবাসটি চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার আবেদন করেছি। দ্রুত যাতে এটি চালু করা যায়, সে বিষয়ে উচ্চমহলে কথা বলছি।”

বর্তমানে এই সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও দ্রুত ছাত্রাবাস চালুর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় মানুষজন।