চিকিৎসার অছিলায় ৮০ বছরের এক বৃদ্ধাকে সিকিম থেকে শিলিগুড়িতে এনে লজে ফেলে রেখে উধাও নাতি। এমন মানবিক সংকটে উত্তাল এনজেপি এলাকা। ঘটনাটি সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শোভা তামাং নামে ওই বৃদ্ধাকে প্রায় ২০ দিন ধরে দেখভাল করছেন এনজেপির এক লজ মালিক ইন্দ্রজিৎ কুণ্ডু। শেষমেশ বিপাকে পড়ে তিনি এনজেপি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
লজ মালিক ইন্দ্রজিৎ জানান, প্রায় কুড়ি দিন আগে বিশাল ড্যানিয়েল তামাং নামের এক যুবক দিদিমাকে সঙ্গে নিয়ে লজে ওঠেন। কিছু টাকা অগ্রিম দিয়ে কাজের কথা বলে বেরিয়ে যায় সে। এরপর আর কোনওদিন লজে ফেরেননি। বৃদ্ধাকে লজে রেখে যাওয়ায় মানসিক চাপে পড়েন মালিক। তবুও মানবিকতার খাতিরে তিনি নিজের দায়িত্বে বৃদ্ধার থাকা,খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।
শোভা তামাং কান্নাভেজা গলায় জানান, সাত মাস বয়স থেকে কোলে-পিঠে মানুষ করেছি নাতিকে। সে-ই আজ আমাকে মিথ্যে বলে ফেলে রেখে চলে গেল। আর বাড়ি ফিরতে চাই না, জানি না ওরা আমাকে নিয়ে কী করবে।
বৃদ্ধার অসহায়তা দেখে আবেগে পড়ে যান লজ মালিকও। তাঁর কথায়, টাকা না পেলেও মায়ের বয়সি একজন মানুষকে রাস্তায় ফেলে দিতে পারি না। কিন্তু এখন নাতি ও তার স্ত্রী আমাকে উল্টে ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে। তাই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।
পরিবারের অতীত ঘেঁটে জানা গিয়েছে, ছোটবেলা থেকে কলকাতার তিলজলায় থাকতেন শোভা তামাং। চল্লিশ বছর বয়সে স্বামীর মৃত্যু হলে মেয়ে মেনিকে বড় করেন তিনি। মেয়ের বিয়ে ভেঙে গেলে সাত মাসের নাতি ড্যানিয়েলকে নিয়ে মা-ছেলে এসে থাকেন শোভার কাছে। পরে ড্যানিয়েল সিকিমে গিয়ে এক বিবাহিতা মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করেন। বছর খানেক আগে আর্থিক চাপে দিদিমাকে সিকিমে নিয়ে যান তিনি।
এদিকে এনজেপি থানার পুলিশ খবর, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বৃদ্ধার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও পুনর্বাসন নিয়েও আলোচনা চলছে। সম্প্রতি অবহেলিত বয়স্ক নাগরিকদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা আবারও প্রশ্নের মুখে।
