ডায়াবেটিস এবং হাই ব্লাড প্রেসার হল দুটি সাধারণ কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা কিডনির স্বাস্থ্যের উপর বড় প্রভাব ফেলে। উভয়ই কিডনির রোগের (সিকেডি) প্রধান বড় কারণ, এটি এমন একটি অসুস্থতা যা ক্রমশ শরীরের ক্ষতি করে এবং উপেক্ষা করা হলে রোগীর কিডনি ফেইলও করতে পারে। এই রোগগুলি যাতে বাড়তে না পারে এবং রোগী যাতে ভালো থাকে সেজন্য মাল্টিডিসিপ্লিনারি কেয়ার অ্যাপ্রোচ প্রয়োজন। যা প্রয়োগ করার সময় সেটি কিডনিকে কীভাবে প্রভাবিত করছে সেদিকে নজর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিডনিতে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের প্রভাব:
ডায়াবেটিসে ক্রমাগত ব্লাড সুগারের মাত্রা বাড়তে থাকে এবং তা কিডনির স্মল ব্লাড ক্যাপিলারিজের ক্ষতি করে, তাদের ফিল্টার (পরিশ্রুত) করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তখন প্রস্রাবে (ইউরিনে) প্রোটিন পাওয়া যায় (অ্যালবুমিনুরিয়া)। এটি কিডনির রোগের ঠিক আগের অবস্থা, যার থেকেই পরবর্তীতে বড় রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। এছাড়াও, ডায়াবেটিস মূত্রাশয়ের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে, স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে, সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় যা কিডনির আরও ক্ষতি করে। হাই ব্লাড প্রেসার রেনাল ব্লাড ভেসেলে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা কিডনির রোগ বাড়িয়ে দেয়। ফলস্বরূপ, কিডনিতে কম রক্ত পৌঁছায়, যা তাদের ক্ষতি করে এবং একটি ভিসিয়াস সাইকেল তৈরি করে যেখানে কিডনি আঘাত পায় এবং এই কারণে ব্লাড প্রেসার ম্যানেজমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনিয়ন্ত্রিত হাই ব্লাড প্রেসার কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায় এবং সিকেডি রোগের প্রকোপ বাড়ায়।
মাল্টিডিসিপ্লিনারি কেয়ারের গুরুত্ব
কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ডায়াবেটিস এবং হাই ব্লাড প্রেসার পরিচালনা করতে নেফ্রোলজিস্ট, এন্ডোক্রিনোলজিস্ট, কার্ডিওলজিস্ট, ডায়েটিশিয়ান, ডায়াবেটিস এডুকেটর এবং প্রাথমিক কেয়ার গিঢারদের একটি দল-ভিত্তিক পদ্ধতির প্রয়োজন। এই ইন্টিগ্রেটেড (সমন্বিত) কেয়ার মডেল এই জটিল অবস্থার সমস্ত দিকগুলির সঠিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।
মাল্টিডিসিপ্লিনারি লিডারশিপের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান
● প্রাথমিক সনাক্তকরণ: ডায়াবেটিস এবং হাই ব্লাডপ্রেসার রোগীদের রেনাল ফাংশন এবং প্রস্রাবে প্রোটিনের নিয়মিত স্ক্রীনিং করে সময়মত রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা সম্ভব।
● অপ্টিমাইজ করা ওষুধ: এসিই ইনহিবিটর বা এআরবি-এর মতো ওষুধ রক্তচাপকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে নামিয়ে এনে কিডনিকে রক্ষা করতে সাহায্য করে, যা সাধারণত ১৩০/৮০ এমএম/এইচজি-এর নিচে থাকে। টাইট গ্লাইসেমিক কন্ট্রোলের সঙ্গে মিলে ইন্ডিভিজুয়াল HbA1c গোলস ডায়াবেটিস থেকে কিডনির ক্ষতির পরিমাণ কমায়।
● জীবনযাত্রার পরিবর্তন: স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া (লবণ কম এবং প্রোটিন বেশি), ঘন ঘন ব্যায়াম করা, ওজন নিয়ন্ত্রণ করা এবং ধূমপান ত্যাগ করা গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস এডুকেটর এবং ডায়েটিশিয়ান রোগীদের সাহায্য করার জন্য অপরিহার্য।
● কার্ডিওভাসকুলার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট: সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে কোলেস্টেরল মোকাবেলা করা উচিত, সঠিক ওষুধের প্রচার এবং মনোসামাজিক সহায়তা প্রয়োজন।
● ইন্টিগ্রেটেড কেয়ার (সমন্বিত যত্ন): রোগী যাতে নিয়ম মেনে চলে তাই তাকে উৎসাহিত করতে, তার অবস্থা কতটা ভালো হল তা মূল্যায়ন করতে এবং চিকিৎসার নিয়মগুলি কাস্টমাইজড করতে, মাল্টিডিসিপ্লিনারি টিম ঘন ঘন যোগাযোগ করে।
ডায়াবেটিস এবং হাই ব্লাডপ্রেসার একসঙ্গে কিডনির কার্যকারিতার সামনে একটি মেজর থ্রেট। তবে প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি কেয়ার মেথডের সাহায্যে কিডনি ফেইলিওরের অ্যাডভান্সমেন্ট প্রতিরোধ করা যেতে পারে বা এই রোগ যাতে দ্রুত না বাড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখা যেতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রোগের ফলাফল উন্নত করতে এবং জীবনযাত্রার মান ভালো করার জন্য, সহযোগিতামূলক কেয়ার মডেল প্রয়োজন যেখানে অন্তর্ভুক্ত থাকে সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি, জীবনধারার পরিবর্তন এবং রোগীর সঠিক শিক্ষা।
এই সংক্ষিপ্ত নিবন্ধটি ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে যুক্ত কিডনি রোগ মোকাবেলায় সমন্বিত যত্নের গুরুত্বের উপর জোর দেয়, সম্ভাব্য ক্ষতি প্রতিরোধ করা এবং চিকিৎসার বিকল্পের উপর ফোকাস করে। লিঙ্ক: https://www.yashodahospitals.com/