‘সেকুলার গান’ গাইলেন লগ্নজিতা

বিরূপ চিন্তাধারার সামনে মাথা নোয়ানো নয়, যে গান নিয়ে এত বিতর্ক, নিজের সর্বশেষ শোয়ে সেই গানকেই ‘সেকুলার’ (পড়ুন ধর্মনিরপেক্ষ) বলে উল্লেখ করে গাইলেন সঙ্গীতশিল্পী লগ্নজিতা চক্রবর্তী। বললেন, ‘এবার একটা সেকুলার গান…’। তারপরই তাঁর গলায় শোনা গেল ‘জাগো মা…’।

ইতিমধ্যেই লগ্নজিতা চক্রবর্তীকে হেনস্থার ঘটনায় সরব হয়েছে নানা মহল। একদিকে যেমন উদ্বিগ্ন শিল্পীরা, তেমনই উদ্বিগ্ন রাজনীতির কারবারিরাও। বাংলার ‘সামাজিক পটভূমি’তে এমন ঘটনাকে কার্যত নজিরবিহীন এবং অনাকাঙ্খিত বলেই মনে করছেন অনেকে। ঠিক কী ঘটেছিল লগ্নজিতার সঙ্গে?

ঘটনা গত শনিবারের। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন লগ্নজিতা। উৎসবের মরসুমে তাঁর গান শুনতে ঠাসা ভিড়। একের পর এক গান ধরছিলেন তিনি। জনতার মধ্য়েও তৈরি হয়েছিল উন্মাদনা। তবে সবটাই যেন থিতিয়ে একটা ঘটনাকে ঘিরে। টিভি৯ বাংলাকে লগ্নজিতা জানিয়েছিলেন, ‘আমার লিস্টের সপ্তম গানটা গাওয়া হয়ে গিয়েছিল। অষ্টম গান ধরার আগে অন্য়ান্য শিল্পীদের মতোই দর্শকদের সঙ্গে কথা বলছিলাম।’

এই প্রসঙ্গে বলে রাখা প্রয়োজন, লগ্নজিতার ওই সপ্তম গানটি ছিল দুর্গাপুজোয় মুক্তি পাওয়া ‘দেবী চৌধুরাণী’ ছবির ‘জাগো মা’। সেটি গাওয়ার পরই অষ্টম গানটি গাইতে যাচ্ছিলেন তিনি। তখনই দর্শকদের মধ্যে থেকে এক ব্য়ক্তি চিল চিৎকার করে ওঠেন। তাঁর নাম মেহবুব মল্লিক। লগ্নজিতার কথায়, ‘উনি মারমুখী হয়ে স্টেজের দিকে ছুটে আসছিলেন। একেবারে আমার কাছ পর্যন্ত চলে এসেছিলেন। আমি কিছু ঠাওর করার আগেই উপস্থিত দর্শক ও অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা ওনাকে ধরে-বেঁধে সরিয়ে নিয়ে যান।’ গায়িকার অভিযোগ, ‘সেই সময়ই ওই ব্যক্তি চিৎকার করে বলেন, এবার সেকুলার গা!’

সোমবার একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে সেই ‘জাগো মা’ গানকেই ‘সেকুলার’ বলে উল্লেখ করে গাইলেন লগ্নজিতা। পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত মেহবুব মল্লিক পেশায় ব্যবসায়ী, স্কুলমালিক। আপাতত তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবশ্য়, এই ঘটনার পর প্রশ্নের মুখে পড়েছে ভগবানপুর থানার ওসি শাহেনশাহ হকও। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে। অভিযোগ নিতে টালবাহানা ও তদন্তে গাফিলতির অভিযোগে আপাতত স্ক্যানারে পড়ে গিয়েছেন এই পুলিশকর্তা।