নোভা IVF ফার্টিলিটি, শিলিগুড়ির ডাক্তাররা জানাচ্ছেন যে এই অঞ্চলে পুরুষদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা খুব দ্রুত বাড়ছে। প্রায় প্রতি দুজন পুরুষ রোগীর মধ্যে একজনেরই শুক্রাণু নিয়ে সমস্যা দেখা যাচ্ছে – হয় তা সংখ্যায় কম, নড়াচড়ায় দুর্বল, নয়তো তার গুণগত মান খারাপ। ডাক্তাররা জোর দিয়ে বলছেন, এই সমস্যা কমাতে হলে খুব তাড়াতাড়ি পরীক্ষা করানো, জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা এবং সবাইকে এই বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া খুব জরুরি।
ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আগের বছরগুলোর তুলনায় এখন পুরুষদের কারণে বন্ধ্যাত্বের ঘটনা অনেক বেশি বেড়েছে। আগে এই সমস্যা যেখানে বেশিরভাগ ৪০-এর পরের পুরুষদের মধ্যে দেখা যেত, কিন্তু এখন মাত্র ৩০-৩২ বছর বয়সের তরুণদের মধ্যেও খুব বেশি হচ্ছে। এর পিছনে রয়েছে খারাপ জীবনযাত্রা, সিগারেট-তামাক খাওয়া, পরিবেশের দূষণ এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ যেগুলো অনেক সময় ধরা পড়ছে না। এসবের ফলে শুক্রাণুর সংখ্যা, সেগুলির নড়াচড়া আর গুণমান খারাপ হয়ে যাচ্ছে, ফলে সন্তান হওয়ার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।
নোভা IVF ফার্টিলিটি, শিলিগুড়ির ফার্টিলিটি বিশেষেজ্ঞ ডাঃ যামিনী আগরওয়াল বলেছেন, “বর্তমানে আমরা প্রায় সব বয়সের পুরুষদের মধ্যেই শুক্রাণু পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হতে দেখছি, এমনকি ২৮-২৯ বছরের ছেলেদের মধ্যেও। পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব আর এখন শুধু বয়স্কদের সমস্যা নয়। খারাপ জীবনযাত্রা, সিগারেট-তামাক খাওয়া আর পরিবেশের দূষণ এর পিছনে বড় ভূমিকা নিচ্ছে। এসবের কারণে শুক্রাণু স্ট্রেসে পড়ে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যাকে আমরা চিকিৎসার ভাষায় বলি DNA ফ্র্যাগমেন্টেশন। সাধারণত এই ক্ষতি ২০ শতাংশের নীচে থাকা উচিত, কিন্তু এখন অনেক রোগীর ক্ষেত্রে তা ৪০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত দেখছি। এর ফলে সরাসরি সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা খুব কমে যায়”।
আরেকটা বড় চিন্তার বিষয় হলো ডায়াবেটিস আর থাইরয়েডের মতো রোগ যেগুলো অনেক পুরুষের ক্ষেত্রেই ধরা পড়ছে না। এই রোগগুলো না ধরা পড়লে শুক্রাণুর স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়। বেশিরভাগ পুরুষ শুধু শুক্রাণুর পরীক্ষা করান, কিন্তু রক্ত পরীক্ষা করান না। ফলে এই লুকোনো রোগগুলো চিকিৎসা ছাড়াই থেকে যায়। অনেক ক্ষেত্রে এই মূল রোগের চিকিৎসা করলেই শুক্রাণু আবার ঠিক হয়ে যায় বা তার গুণমান অনেক ভালো হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয়, গ্রামের দিকে অনেক পুরুষই এই রোগ সম্পর্কে জানেনই না। আমরা ফার্টিলিটি টেস্টের সঙ্গে পুরো শরীরের চেকআপ করানো খুব জরুরি বলে উল্লেখ করি। যাঁদের সন্তান হচ্ছে না, তাঁরা আর দেরি না করে ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞের কাছে যান। শুক্রাণু একদম শূন্য থাকলেও আজকাল স্পার্ম রিট্রিভাল পদ্ধতিতে নিজের সন্তানের বাবা হওয়া সম্ভব,” বলেছেন নোভা আইভিএফ ফার্টিলিটি, শিলিগুড়ির ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ডাঃ শতাব্দী দে।
