বিশ্ব তামাকমুক্তি দিবসে, শিলিগুড়ির নোভা আইভিএফ ফার্টিলিটি, একটি ওয়াকাথন এর আয়োজন করেছে। এর মাধ্যমে তারা ধূমপান, গুটখা, খৈনি, আর হুক্কার মতো তামাকের ব্যবহার পুরুষ ও মহিলা উভয়ের প্রজনন ক্ষমতাকে কতটা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা সমাজের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছে। ডাক্তার, স্বাস্থ্য কর্মী এবং শিলিগুড়ির ১০০-এর বেশি বাসিন্দা এই ওয়াকাথনে যোগ দিয়ে শহর জুড়ে এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের মেয়র শ্রী গৌতম দেব এবং শিলিগুড়ির প্রখ্যাত সমাজসেবক ও জনপ্রতিনিধি শ্রী রবীন্দ্র জৈন। ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞদের মতে, শিলিগুড়ির নোভা আইভিএফ আসা ৫০-৬০% দম্পতি, বিশেষ করে পুরুষরা বেশিরভাগই গ্রামীন এলাকার, কৃষি জীবী বা চা বাগানের মানুষ, যারা নিয়মিত তামাক ব্যবহার করেন। শহরের তরুণ এবং পাহাড়ি এলাকার মহিলাদের মধ্যেও তামাকের ব্যবহার বাড়ছে, প্রায় ৫-১০% মহিলা সেখানে ধূমপান করেন।
ডাঃ শতাব্দী দে, ফার্টিলিটি স্পেশ্যালিস্ট, নোভা আইভিএফ ফার্টিলিটি, শিলিগুড়ি বলেন, “যেকোনো ধরনের তামাক সেবন ডিম্বাণু এবং শুক্রাণুর গুণমানের ক্ষতি করতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে, এটি ডিম্বাশয়ের সঠিক কার্যকারিতা বন্ধ করতে পারে, এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে, তা শুক্রাণুর সংখ্যা কমিয়ে দিতে এবং শুক্রাণুর গুণমান খারাপ করতে পারে। এছাড়াও, প্যাসিভ স্মোকিংয়ের সমস্যার কারণে, ধূমপায়ী নন এমন মানুষেরাও এর সংস্পর্শে আসে। এর ফলে যেমন গর্ভধারণে অসুবিধা সৃষ্টি হতে পারে কিছু ক্ষেত্রে তা বারবার গর্ভপাতের কারণ হতে পারে”।টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর একটি সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে যে পশ্চিমবঙ্গের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা তামাকের প্রতি আসক্ত। শিলিগুড়ি, একটি ক্রমবিকাশশীল শহর যা চা বাগান দিয়ে ঘেরা, সেখানে হুক্কা সহ ঐতিহ্যবাহী এবং আধুনিক তামাকের ব্যবহার, ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে এর ক্ষতিকর প্রভাবও পরিলক্ষিত।
ডাঃ যামিনি আগরওয়াল, ফার্টিলিটি স্পেশ্যালিস্ট, নোভা আইভিএফ, শিলিগুড়ি আরো বলেন, “ধূমপান এবং তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। হুক্কা, ধূমপান এবং ভেপিং তরুণদের কাছে ফ্যাশনেবল মনে হতে পারে, কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের, বিশেষ করে প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। আমরা লক্ষ্য করেছি যে দম্পতিরা গর্ভধারণে সমস্যার সম্মুখীন হলে উর্বরতা বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করতে দ্বিধা করেন। এখনও বন্ধ্যাত্ব নিয়ে সচেতনতার অভাব এবং লজ্জার ভাব বিদ্যমান। বন্ধ্যাত্ব আসলে একটি শারীরিক সমস্যা, ঠিক যেমন ডায়াবেটিস, এবং এর জন্য ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞের সাথে চিকিৎসা পরামর্শ প্রয়োজন। স্বাস্থ্যসেবা সংস্থার পক্ষ থেকে সম্মানিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন, ডাঃ অরিত্র মাঝি (স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ), ডাঃ শ্রীময় কুন্ডু (শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ), ডাঃ এ.কে. মাঝি (স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ), ডাঃ সুপর্ণা রায় (স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ), এবং কামালউদ্দিন আনসারী (স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ)। নোভা আইভিএফ ফার্টিলিটি শিলিগুড়ি এই অঞ্চলে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার এবং স্বচ্ছ, বৈজ্ঞানিকভাবে উন্নত এবং নৈতিক উর্বরতা সেবা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”।