পরপর সাংবাদিক বৈঠকে মুখোমুখি হয়ে পড়লেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব এবং বিধায়ক শংকর ঘোষ। গত দুই দিন ধরে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে কার্যত তুঙ্গে পৌর-রাজনীতি। দুই দিন আগে শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন বিধায়ক শংকর ঘোষ। সেখানেই তিনি শিলিগুড়ি পৌর নিগমের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দেন। অভিযোগ করেন, বিধায়ক তহবিল থেকে একাধিকবার অর্থ দেওয়া হলেও সেই অর্থ দিয়ে কাজ করা হচ্ছে না। বহু উন্নয়নমূলক প্রকল্প আটকে আছে, ফলে মানুষের স্বার্থে বরাদ্দ অর্থ অকার্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “মেয়র জেনে-বুঝে কাজ আটকে রাখছে, কখনও ডিএম আবার কখনও প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বিধায়কের দেওয়া প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।”
এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা সাংবাদিক বৈঠকে আক্রমণে নামেন মেয়র গৌতম দেব। তিনি অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানান—শংকর ঘোষ “মিথ্যা বক্তব্য” ছড়াচ্ছেন। মেয়রের অভিযোগ, বিধায়ক বেছে-বেছে এমন কিছু প্রকল্পে তহবিল দিচ্ছেন যেগুলো সরকার আগেই হাতে নিয়েছে এবং যেগুলির কাজ বহু আগেই শুরু হয়েছে। ফলে জনসমক্ষে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি মেয়রের। তবে এখানেই শেষ নয়। শনিবার ফের শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিধায়ক শংকর ঘোষ। সেখানে তিনি ফের বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন। তাঁর দাবী, “মেয়র যা বলছেন সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিধায়ক তহবিল যেখানে যেখানে বরাদ্দ হয়েছে, সেখানে মেয়র অন্যান্য দপ্তর থেকে নতুন করে বরাদ্দ এনে জোরপূর্বক কাজ করাচ্ছেন। ফলে বিধায়কের অর্থ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে।”
শংকর ঘোষ আরও অভিযোগ করেন, ছয় মাসে তিনি মাত্র ৩০ লক্ষ টাকা পান বিধায়ক উন্নয়ন তহবিল থেকে। সেখানে বেশ কিছু প্রকল্পে মাত্র পাঁচ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব। ফলে সেই অর্থে কাজ হওয়া স্বাভাবিকভাবেই কঠিন। অভিযোগ, এরপর মেয়র অন্য তহবিল থেকে বড় অঙ্কের বরাদ্দ এনে প্রকল্প রূপায়ণে জোর দেন, যার ফলে অনেক সময়ে বিধায়ক তহবিলের অর্থ অকেজো হয়ে পড়ে। এই পরপর অভিযোগ-প্রত্যাখ্যানের পালায় শিলিগুড়ি জুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক আলোচনা। সামনে ভোট—এ অবস্থায় শাসক-বিরোধী তরজা যে আরও তীব্র হবে, তা অনুমান করাই যায়।
