শান্তিপুর, ২ জুলাই ২০২৫ — নদিয়ার শান্তিপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি সুব্রত সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম বিবাহিত জীবনের তথ্য গোপন রেখে দ্বিতীয়বার বিয়ে করার এবং পরে সেই স্ত্রীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযোগকারিণী নিজেকে নেতার দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেছেন এবং শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ২৩ মে সুব্রত সরকার প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রেখে ওই মহিলাকে বিয়ে করেন। পরে তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তান থাকার কথা জানতে পেরে সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। এরপর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। অভিযোগকারিণীর দাবি, তাঁকে অ্যাসিড ছুড়ে মারার হুমকি দেওয়া হয় এবং চলন্ত ট্রাকের নিচে ফেলে হত্যার পরিকল্পনাও করা হয়।
এছাড়াও, অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, সুব্রত সরকারের এক মহিলা তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলেও তিনি জানতে পারেন। এই নিয়ে প্রতিবাদ করায় তাঁর উপর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। এমনকি তাঁদের ব্যক্তিগত ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও তুলেছেন তিনি।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই শান্তিপুর থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছে এবং তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রানাঘাটের এসডিপিও সবিতা গটিয়াল জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত সুব্রত সরকার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চলছে। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই অভিযোগ আনা হয়েছে।”
তৃণমূলের শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, “সুব্রত দলের ব্লক সভাপতি হলেও, এই অভিযোগ তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। দল এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। আইন আইনের পথে চলবে।”
ঘটনাটি নিয়ে বিজেপি কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, “নারী নির্যাতন ও অনৈতিক আচরণ এখন তৃণমূলের সংস্কৃতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও মহিলারা কতটা নিরাপদ, তা এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট।”
এই ঘটনায় শান্তিপুর ও আশপাশের এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়েছে এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
