পাহাড়ি এলাকায় নতুন করে কমলার বাগান বিস্তারের পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং ফুল চাষ আরও বাড়াতে উদ্যানপালন ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তর একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আজ আগরতলায় সেন্টার ফর ফ্লোরিকালচার অ্যান্ড ল্যান্ডস্কেপ-এর উদ্বোধন করে এ তথ্য জানান উদ্যানপালন ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ মন্ত্রী রতন লাল নাথ। একইসঙ্গে তিনি বাধারঘাট প্রোজেনি অর্চার্ড প্রাঙ্গণে রাজ্যস্তরের ‘অরেঞ্জ ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’-এরও উদ্বোধন করেন। মন্ত্রী বলেন, একটি রাষ্ট্র ও দেশের ভিত্তি হলো কৃষি। দেশের মোট উৎপাদনে প্রায় ৪৬ শতাংশ অবদান কৃষকদের। একসময় কৃষিকে উপেক্ষা করা হচ্ছিল, কিন্তু এখন মানুষ আবার কৃষির দিকে ফিরে আসছে। জিরানিয়ার এক কৃষক তার জমিতে উৎপাদিত মাল্টা ১০০ টাকা করে বিক্রি করেন সেইসাথে মোসাম্বি, ভিয়েতনামী মোসাম্বিও চাষ হচ্ছে।
আমাদের রাজ্যে জম্পুই হিলস, সাখাং ও কিল্লা সহ বিভিন্ন এলাকায় এখন কমলা চাষ হচ্ছে, যেখানে আগে এই ফসল দেখা যেত না। তিনি জানান, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কৃষকদের সহায়তায় একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। মন্ত্রী আরও বলেন আমরা চাই প্রতিটি পরিবারে কর্মসংস্থান হোক। আগে ত্রিপুরায় পেঁয়াজ চাষের উদ্যোগ ছিল না। এখন কৃষি বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে ত্রিপুরায় ভালো পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন সম্ভব। এআরসি আলুও আমরা চাষ শুরু করেছি, যার চাহিদা অনেক। এবার বাধারঘাটে প্রথমবারের মতো অরেঞ্জ ফেস্টিভ্যাল করা হচ্ছে; কিল্লায় এর আগে দু’বার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগে যে জায়গাটিতে জঙ্গল ছিল, সেখানে এখন বছরজুড়ে ফুল চাষ হচ্ছে। শতাধিক কমলা চাষি এখানে এসেছেন। আমাদের মূল লক্ষ্যই হলো কৃষকদের উন্নয়ন।” মন্ত্রী জানান, বর্তমানে রাজ্যে কমলা চাষের আওতা ৩,৮৪৬ হেক্টর এবং উৎপাদন ১৬,৫৩৮ মেট্রিক টন।
প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন ৪,৩০০ কেজি। বিশেষজ্ঞ দলের পরামর্শে পশ্চিম ত্রিপুরার বড়মুড়া, খোয়াই, গোমতী জেলা ও ধলাই জেলার সাখান পাহাড়ে নতুনভাবে কমলা চাষের এলাকা বাড়ানো হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ২০১৮–১৯ থেকে ২০২৫–২৬ অর্থবছর পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ৩৫৩ হেক্টর নতুন জমিকে কমলা চাষের আওতায় আনা হয়েছে। তার মধ্যে চলতি বছরে ৮০ হেক্টর জমিতে নতুন কমলা বাগান তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া একই সময়ে ২২৮ হেক্টর পুরনো কমলা বাগানের পুনরুজ্জীবন করা হয়েছে, যার জন্য প্রতি হেক্টরে ২,০০০ টাকা ব্যয় হয়েছে। চলতি বছর ৩১ হেক্টর পুরনো বাগান পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়িকা মীনা রানি সরকার; কৃষি ও কৃষককল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়; কৃষক কল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ফণিভূষণ জমাতিয়া এবং উদ্যানপালন ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তরের পরিচালক দীপক কুমার দাস।
