পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কালীগঞ্জে উপনির্বাচনের বিজয় মিছিল চলাকালীন বোমা বিস্ফোরণে নিহত চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তামান্না খাতুনের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানাতে গিয়ে বিব্রত হলেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ূন কবীর। মঙ্গলবার তিনি তামান্নার বাড়িতে গিয়ে একটি টাকার খাম দিতে চাইলে, তা স্পষ্টভাবে ফিরিয়ে দেন শিশুটির মা সাবিনা বিবি।
সাবিনা বলেন, “আমার জমি আছে, আমার বাড়ি আছে, টাকা নিতে আমি বাধ্য নই। আমি বিচার চাই, দয়া নয়।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “পুলিশ বলছে দুর্ঘটনা, কিন্তু এটা পরিকল্পিত খুন। যারা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে, তাদের কঠোর শাস্তি চাই।”
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার, যখন তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয় মিছিল থেকে সিপিএম সমর্থকদের বাড়ির দিকে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সেই সময় বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তামান্না খাতুন বোমার আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। আহত হন তাঁর মা সাবিনা ইয়াসমিনও।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির পরিবারের দায়ের করা এফআইআরে নাম থাকা ২৪ জনের মধ্যে পাঁচজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা সকলেই তৃণমূল কর্মী বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
তামান্নার পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সন্ত্রাস চালিয়ে আসছে এবং পুলিশ নিষ্ক্রিয় থেকেছে।
ঘটনার নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স-এ (পূর্বতন টুইটার) লিখেছেন, “এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য আমি গভীরভাবে শোকাহত। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল বলেন, “আপনার দলের লোকেরা একটি শিশুকে হত্যা করেছে, অথচ আপনি বিধানসভায় একটি শব্দও বললেন না।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেস—তিন দলই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
