জলমগ্ন রাস্তায় মাছ ধরার প্রতিবাদ! মালদার দক্ষিণ যদুপুরে ক্ষোভে ফুঁসছে গ্রামবাসীরা

বর্ষা এখনও ঠিকমতো শুরুই হয়নি, তার আগেই জলমগ্ন গোটা এলাকা। মালদার ইংলিশবাজার ব্লকের যদুপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ যদুপুর মডেল কলোনির বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে। এলাকার একমাত্র যাতায়াতের রাস্তা বৃষ্টির প্রথম দফায়ই পরিণত হয়েছে খালে। এই সমস্যার জেরেই গত বছর জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল এক শিশুর। কিন্তু তবুও প্রশাসনের টনক নড়েনি বলে অভিযোগ।

এই সমস্যার প্রতিবাদে অভিনব পথ বেছে নেন স্থানীয়রা। জলমগ্ন রাস্তায় জাল ফেলে প্রতীকী মাছ ধরে তাঁরা। এর মাধ্যমে তাঁরা প্রশাসনের চোখে আঙুল দিয়ে বোঝাতে চান, রাস্তা নয়, যেন তারা এখন জলপথে বাস করছেন। গ্রামবাসী আবেদা খাতুন বলেন, “প্রায় দশ বছর ধরে একই অবস্থা। ভোটের আগে নেতারা এসে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে যাতায়াতে রোজ ভোগান্তি হচ্ছে।” বিক্ষোভকারী গ্রামবাসী জাহির হোসেনের কটাক্ষ, “এটা রাস্তাই না, মাছ ধরার জলাশয়! তাই আমরাও প্রতিবাদে মাছ ধরতে নেমেছি। প্রশাসনের চোখ খুলতেই হবে।” স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সানাউল ইসলাম জানান, “আমি বহুবার পঞ্চায়েত প্রধান ও ব্লক দপ্তরে এই সমস্যার কথা জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। আমরা নিজেরাও অসহায় বোধ করছি।” এদিকে ইংলিশ বাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজেশ পাল জানান,”পথসাথী প্রকল্পের আওতায় এই রাস্তার কাজের অনুমোদন মিলেছে। খুব শীঘ্রই টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরু হবে। মানুষ যেন আর দুর্ভোগে না পড়েন, তার চেষ্টা করা হবে।”

এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপির উত্তর মালদার সহ-সভাপতি তাপস গুপ্ত। “রাজ্যের শাসকদলের ব্যর্থতায় মানুষ জলকষ্টে ভুগছে। মৃত শিশুর ঘটনায়ও শিক্ষা নেয়নি সরকার। এর বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।” এলাকার মানুষের দাবি, যতদিন না স্থায়ী সমাধান হচ্ছে, ততদিন এই প্রতিবাদ চলবে। বর্ষা যত এগোবে, জলবন্দি যন্ত্রণাও ততই বাড়বে — তার আগেই সরকার যদি পদক্ষেপ না নেয়, তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলেই আশঙ্কা।