সহায়িকার বাড়িতে চালু থাকা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ঘিরে বিস্তর অভিযোগ। খামখেয়ালি ভাবে কেন্দ্র পরিচালনার অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন এলাকার মানুষ। বৃহস্পতিবার সহায়িকাকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার জনমদল পশ্চিমপাড়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি রয়েছে সহায়িকা শামীমা খাতুনের বাড়িতেই। কেন্দ্রের জন্য বরাদ্দ দুটি সরকারি ঘর থাকলেও, নিয়মমাফিক পরিচালনার চিহ্ন নেই বললেই চলে। অভিযোগ, সহায়িকা ও তাঁর স্বামী দরবেশ আলি নিজেদের ইচ্ছেমতো কেন্দ্র চালান। সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কেন্দ্র খোলা থাকার সরকারি নির্দেশ থাকলেও, কার্যক্ষেত্রে তা খোলা থাকে মাত্র এক ঘণ্টা, সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত। দশটার পর শিশুদের খাবার নিতে গেলে ফেরত পাঠানো হয় বলে অভিযোগ।
এছাড়া, কেন্দ্রের সোলার সাব মার্সিবল পাম্প থেকেও জল আনতে পারেন না সাধারণ মানুষ। সহায়িকার স্বামী দরবেশ আলি দেড় মাস ধরে তাতে তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন। এমনকি ওই জল নিজের বাথরুম ও সবজি চাষে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জল আনতে গেলে গালিগালাজ পর্যন্ত করা হয়।
বসবাসকারী আনোয়ার আলম ও লুকমান আলমরা জানান, কেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য কোনও আলাদা রাস্তা নেই। সহায়িকার বাড়ির ভিতর দিয়েই যেতে হয়। সেখানে শিশুদের শিক্ষা দেওয়া তো দূরের কথা, একঘরে রাখা হয়েছে জ্বালানির স্তুপ। পাম্পের জলও ব্যবহার করতে পারেন না পাড়ার লোকজন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একাধিকবার সিডিপিও ও অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ব্লক প্রশাসন, মহকুমা শাসক ও জেলা শাসকের কাছেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, কিন্তু তদন্তে এখনও কেউ আসেননি।
বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে সহায়িকা শামীমা খাতুন জানান, “সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিয়ম মেনেই কেন্দ্র খোলা রাখা হয় ও খাবার বিতরণ হয়। পাম্পটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল।”
অন্যদিকে, কেন্দ্রে নিযুক্ত কর্মী মেহেরুন নেশা বলেন, “সরকারি তালিকা অনুযায়ী খাবার দেওয়া হয়। পাম্প সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করা হয়েছিল। পাড়ার সঙ্গে কিছু ঝামেলা চলছিল, সেটিই ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।”
এই প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের সিডিপিও আব্দুস সাত্তার বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
স্থানীয়দের দাবি, শিশুদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ জরুরি। সহায়িকাকে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়া ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিকে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার দাবিতে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
