বিশ্ব ক্রিকেটের মঞ্চে জয়ী শিলিগুড়ির বঙ্গ তনয়া রিচা ঘোষ

বিশ্ব ক্রিকেটের মঞ্চে ইতিহাস রচনা করেছে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল। প্রথমবারের মতো মহিলাদের ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতে ভারতীয় নারীরা এনে দিয়েছে অনন্য সম্মান। আর সেই জয়ী দলের অংশ শিলিগুড়ির মেয়ে, বঙ্গ তনয়া রিচা ঘোষ! আজ রিচার সাফল্যে গর্বিত গোটা শিলিগুড়ি — শহর জুড়ে আনন্দ আর উদযাপনের জোয়ার।

রবিবার রাত থেকেই শহরের অলিগলিতে শুরু হয়েছে উল্লাস, আতসবাজির আলোয় ভেসেছে শিলিগুড়ির আকাশ। কারণ এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে এক দীর্ঘ অধ্যবসায়, পরিশ্রম ও পারিবারিক ত্যাগের গল্প।

মাত্র চার বছর বয়সে বাঘাযতীন অ্যাথলেটিক ক্লাবের ক্রিকেট কোচিং সেন্টারে হাতে ব্যাট তুলে নেন রিচা। ক্লাবের কোচ গোপাল সাহার কাছ থেকেই ক্রিকেটের প্রথম পাঠ নেন তিনি। এরপর একের পর এক প্রশিক্ষণ ও ম্যাচ খেলে নিজেকে গড়ে তোলেন এক আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার হিসেবে।

রিচার বাবা মানবেন্দ্র ঘোষ (শহরে “গবা” নামে পরিচিত) ছিলেন তার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রেরণা। নিজের অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেই মেয়েকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন তিনি। কঠোর পরিশ্রম, দৃঢ় মনোবল ও একাগ্র সাধনাই আজ রিচাকে পৌঁছে দিয়েছে বিশ্বমঞ্চের শিখরে।

রিচার প্রথম ক্লাব বাঘাযতীন অ্যাথলেটিক ক্লাব-এ এখন উৎসবের আমেজ। ক্লাবের সচিব প্রসূন দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, “রিচা আমাদের গর্ব। আমরা তাকে বাগডোগরা এয়ারপোর্ট থেকে হুটখোলা জিপে শহর পরিক্রমা করিয়ে ক্লাবে নিয়ে আসব, যেখানে শুরু হয়েছিল তার ক্রিকেট যাত্রা। তারপর তাকে সম্মান জানিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে আমাদের সোনার মেয়েকে।”

শুধু ক্লাব নয়, শহরের বিভিন্ন ক্রীড়াপ্রেমীরাও তৈরি রিচাকে অভ্যর্থনা জানাতে। জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি পৌরনিগম, মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ ও বাঘাযতীন ক্লাব যৌথভাবে রিচাকে সংবর্ধনা জানাতে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। শহরের নানা ক্রীড়া সংগঠন ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও উপস্থিত থাকবেন সেই অনুষ্ঠানে।

রিচা ঘোষ — এক সময় বাঘাযতীনের কোচিং সেন্টারে খেলা ছোট্ট মেয়ে, আজ ভারতের গর্ব, বিশ্বের সামনে শিলিগুড়ির নাম উজ্জ্বল করে তুলেছেন। আজ সত্যিই বলা যায় —“Pride of Siliguri, Pride of India — রিচা ঘোষ!”