একদিকে মাতৃত্বের আনন্দ, অন্যদিকে জীবনের ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াই—দুটো দায়িত্ব একসঙ্গে সামলে নজির গড়লেন মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর কলেজের ছাত্রী মরিয়ম খাতুন।
বুধবার সকাল ১০টার সময় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন মরিয়ম। আর তার ঠিক তিন ঘণ্টা পর, দুপুর দেড়টার সময় হাসপাতালের বেডে বসেই দর্শন বিষয়ে ষষ্ঠ সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা দেন তিনি।
মরিয়মের বাড়ি মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের দক্ষিণ তালসুর গ্রামে। তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর কলেজের ছাত্রী হলেও তাঁর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল সামসী কলেজে। ফাইনাল পরীক্ষার তিনটি পেপারই ওই কলেজেই অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার পরই প্রসব বেদনা শুরু হয় মরিয়মের। স্বামী সামির হোসেন তাঁকে নিয়ে যান হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে রাতেই তাঁকে ভর্তি করা হয়। বুধবার সকালে স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি।
এরপর কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে পরীক্ষার্থীর সংকল্প ও পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে হাসপাতালেই পরীক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। পরীক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর কলেজের অধ্যক্ষ ড. ভূপেন ঘিমিরে।
তিনি বলেন, “একজন মা হয়ে পরীক্ষার এমন দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ খুব কমই দেখা যায়। সদ্যোজাত শিশুর পাশে বসেই সাহসের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়েছেন মরিয়ম।”
মরিয়ম জানিয়েছেন, পরীক্ষা ভালই হয়েছে। আর মা ও নবজাতিকা উভয়েই সুস্থ আছেন।
এই ঘটনায় শুধু কলেজ নয়, গোটা এলাকায় প্রশংসার স্রোত বইছে মরিয়মের জেদ, সাহস ও অধ্যবসায়ের জন্য।
