বালুরঘাটের সৃষ্টিশ্রীমেলা যেন আবার একবার বাংলার লোকশিল্পের শক্ত ভিতের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। মেলার এক কোণে দাঁড়িয়েই চোখে পড়ছে কুশমণ্ডি ব্লকের মহিষবাথান এলাকার জিআই ট্যাগপ্রাপ্ত ঐতিহ্যবাহী মুখা শিল্প। লোকসংস্কৃতির এই প্রাচীন শিল্পকলা এবছর মেলায় আলাদা করে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
বাঁশ, কাঠ ও প্রাকৃতিক উপকরণে তৈরি এই মুখাগুলিতে ফুটে উঠেছে বাংলার লোকবিশ্বাস ও শক্তির প্রতীক। কালী, নরসিংহ, হনুমান থেকে শুরু করে বাঘ ও সিংহ প্রতিটি মুখায় শিল্পীদের নিপুণ হাতের ছাপ স্পষ্ট। গম্ভীরা নাচে ব্যবহৃত এই মুখাগুলি এখন ঘরের দেওয়াল সাজানো থেকে শুরু করে উপহার হিসেবেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
শুধু মুখাই নয়, শিল্পীদের স্টলে বিক্রি হচ্ছে বাঁশের ফুলদানি, ল্যাম্পশেড ও পেনদানি যা আধুনিক সাজসজ্জার সঙ্গে গ্রামীণ ঐতিহ্যের মেলবন্ধন ঘটাচ্ছে। হালকা ও টেকসই গামারি ও আম কাঠে তৈরি এই শিল্পকর্ম ক্রেতাদের কাছে বিশেষভাবে সমাদৃত।
করোনাকালের দীর্ঘ মন্দার পর এবার মেলায় ভালো বিক্রিতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন শিল্পীরা। তাঁদের আশা, এই আগ্রহ ভবিষ্যতে শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে ও নতুন প্রজন্মকে এই ঐতিহ্য রক্ষায় উৎসাহিত করবে। সব মিলিয়ে সৃষ্টিশ্রীমেলা যেন কুশমণ্ডির মুখা শিল্পের পুনর্জাগরণের মঞ্চ হয়ে উঠেছে।
