খেলাধুলার সঙ্গে সংস্কৃতি ও প্রকৃতির মেলবন্ধনের এক অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করল দার্জিলিং পাহাড়ের সোনাদা এলাকার রাজাহাট্টা গ্রামে অনুষ্ঠিত ‘ডোকো ট্রেল রান ২০২৫’। পাহাড়ি জীবনের প্রতীক ‘ডোকো’-কে কেন্দ্র করে আয়োজিত এই বিশেষ ট্রেল রান যেন পাহাড়ের আত্মপরিচয় ও সংগ্রামী জীবনের কথাই নতুনভাবে তুলে ধরল। এই ট্রেল রানে মোট ৫০ জন দৌড়বিদ অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় সেরা হন ইয়াকুব তামাং, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন সুবর্ণা সুব্বা ও তৃতীয় হন লাকপা ছিরিং ভুটিয়া।
পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ, জঙ্গলের ট্র্যাক, খাড়া ঢাল ও ঝিরিপথ পেরিয়ে প্রতিযোগীরা যে দৌড় সম্পন্ন করেন, তা ছিল একদিকে শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা, অন্যদিকে মানসিক দৃঢ়তারও প্রমাণ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে প্রতিযোগীদের উৎসাহিত করেন দার্জিলিংয়ের মহকুমা শাসক রিচার্ড লেপচা, সুখেপোখরি ব্লকের বিডিও আরাগিয়া গুহা, জয়েন্ট বিডিও পেমা লামা ডুকপা, পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সোনা ডোমা ডুকপা, আপার সোনাদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দাওয়া তামাং, পঞ্চায়েত সদস্যা গৌরী থাপা, সোনাদা পুলিশ আউট পোস্টের ইনচার্জ যোগেশ ঠাকুরি সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
আয়োজক রাজাহাট্টা এক্সপ্লোর গ্রুপ, যা ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে গঠিত, মূলত পাহাড়ি অঞ্চলের যুবসমাজকে সামনে রেখে ইকো-ট্যুরিজম ও টেকসই উন্নয়নের বার্তা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে। তাদের উদ্যোগে এই ট্রেল রান শুধু একটি ক্রীড়া অনুষ্ঠান নয়, বরং পাহাড়ি সংস্কৃতি, পরিশ্রমী জীবনধারা ও প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থানের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।
আয়োজকদের বক্তব্য অনুযায়ী, ডোকো ট্রেল রানের মাধ্যমে পাহাড়ি যুবকদের সুস্থ জীবন যাপনে উৎসাহিত করা, স্থানীয় ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা ও রাজাহাট্টার মতো গ্রামকে পর্যটনের মানচিত্রে তুলে ধরাই মূল লক্ষ্য।
সব মিলিয়ে, ডোকো ট্রেল রান পাহাড়ের বুকে অনুষ্ঠিত এমন এক মিলনোৎসব, যেখানে দৌড়ের ছন্দে ধরা পড়েছে পাহাড়ের প্রাণ, সংস্কৃতি ও একসঙ্গে এগিয়ে চলার প্রেরণা।
