ফের এক হৃদয়বিদারক ও অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকলো শিলিগুড়ি শহর। শীতের রাতে মাথার ওপর ছাদ থাকা সত্ত্বেও পারিবারিক বিবাদের জেরে রাস্তায় রাত কাটাতে বাধ্য হলেন এক বিধবা মহিলা। ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি পুর নিগমের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্ত নগর এলাকায়।
অভিযোগকারীর নাম পূর্ণিমা রায় গুইন। তাঁর দাবি, ২০২০ সালে তিনি আইন অনুযায়ী শ্যামাপদ গুইনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ও এরপর থেকেই স্বামীর বাড়িতে বসবাস করছিলেন। তবে কয়েক মাস আগে স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, শ্যামাপদ গুইনের প্রথম পক্ষের ছেলে, তাঁর স্ত্রী ও শাশুড়ির সঙ্গে ক্রমশ অশান্তি বাড়তে থাকে।
রবিবার সেই অশান্তি চরমে পৌঁছয় বলে অভিযোগ। পূর্ণিমা রায় গুইনের দাবি, তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় ও শেষে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। ফলে শীতের রাতে নিরুপায় হয়ে রাস্তাতেই রাত কাটাতে বাধ্য হন তিনি।
রাতভর সুকান্ত নগরের কুণ্ডপুকুর মাঠ সংলগ্ন এলাকায় একাধিক বাড়ির দরজায় আশ্রয়ের আবেদন জানালেও কোথাও ঠাঁই মেলেনি বলে অভিযোগ। পরে স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাঁকে আশিঘড় আউটপোস্টে নিয়ে গেলে তিনি সেখানে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে রাত কাটানোর স্থায়ী ব্যবস্থা না হওয়ায় তিনি শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের প্রতীক্ষালয়ে রাত কাটান।
সোমবার সকাল হতেই ফের স্বামীর ভিটের সামনে ফিরে এসে ধর্নায় বসেন পূর্ণিমা রায় গুইন। তাঁর দাবি, আইন স্বীকৃত স্ত্রী হিসেবে তাঁকে স্বামীর বাড়িতে থাকার অধিকার দিতে হবে। যাওয়ার মতো তাঁর আর কোনো জায়গা নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মেয়র পরিষদ দুলাল দত্ত জানান, এর আগেও বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছিল, তবে তা ফলপ্রসূ হয়নি। রবিবার রাতে ওই মহিলা পথে রাত কাটিয়েছেন, সে বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন না বলেও জানান।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
