পঞ্চায়েতে ভালো কাজের জন্য জাতীয় ক্ষেত্রে ৭টি পঞ্চায়েত পুরস্কার পেয়েছে ত্রিপুরা: মুখ্যমন্ত্রী

সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুফল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। পঞ্চায়েতে ভালো কাজের জন্য জাতীয় ক্ষেত্রে মোট ৭টি পঞ্চায়েত পুরস্কার পেয়েছে ত্রিপুরা। গ্রাম ত্রিপুরার সার্বিক উন্নয়ন আমরা সবসময় চিন্তা করি। আজ আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের একাধিক প্রকল্পের সূচনা করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এরমধ্যে রয়েছে – মুখ্যমন্ত্রী গ্রাম সম্পর্ক যোজনা, মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা গ্রাম সমৃদ্ধি যোজনা ২.০, মেগা গৃহ প্রবেশ, অ্যাচিভমেন্ট বুকলেট চালু করা এবং কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখা জেলা ও ব্লকগুলিকে পুরস্কার প্রদান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী গ্রাম সম্পর্ক যোজনা, মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা গ্রাম সমৃদ্ধি যোজনা ২.০, মেগা গৃহ প্রবেশের মতো কার্যক্রম প্রতিনিয়ত করে চলছে রাজ্য সরকার। এধরণের কার্যক্রমের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করা। সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সরকারি প্রকল্পের সুফল পৌঁছানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন স্কিম বাস্তবায়ন করার জন্য নোডাল দপ্তর হিসেবে কাজ করে গ্রামোন্নয়ন দপ্তর। এছাড়াও বিভিন্ন এক্সটার্নালি এইডেড স্কিম বাস্তবায়ন করে তারা।

কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্যানিটেশন, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট, মহিলাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি বাস্তবায়ন করে গ্রামোন্নয়ন দপ্তর। মূলত, জেলাশাসকদের মাধ্যমে এসব কাজ রূপায়ণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারবার অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে আমাদের। ত্রিপুরা জাতীয় ক্ষেত্রে মোট ৭টি পঞ্চায়েত পুরস্কার পেয়েছে। যার পুরস্কার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। এবার বিহারে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েও ত্রিপুরা সম্পর্কে প্রশংসা শুনে এসেছি। আর সেটা সম্ভব হচ্ছে আপনাদের সকলের প্রচেষ্টার জন্য। আর কাজের সঠিক রূপায়নের জন্য মনিটরিং করাটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য এখন সাধারণ মানুষের মাথার উপর ছাদের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে। গ্রাম ত্রিপুরার সার্বিক উন্নয়ন আমরা সবসময় চিন্তা করি। সেই সঙ্গে গ্রাম পাহাড়ের মানুষের সামাজিক মর্যাদা ও আগামীদিনের ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এই সরকার। ত্রিপুরার উন্নয়নের মূল ভিত ৭৫% থাকেন গ্রামীণ এলাকায়। আমি এরআগেও জনজাতি অফিসারদের নিয়ে কথা বলেছি। তাদের সঙ্গে রাজ্যের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।

গ্রামীণ এলাকার মানুষের উন্নয়নে আরো নজর দিতে হবে। আমরা এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা, এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দিয়েছি। শক্তিশালী গ্রাম, সুশাসন, উন্নত ত্রিপুরা করার লক্ষ্যে আজ এই কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণ ও পিএম জনমন মিশনের আওতায় গত কয়েক বছরে ত্রিপুরাতে অসাধারণ সফলতা পরিলক্ষিত হয়েছে। শুধু আগরতলার উন্নয়ন হলে হবে না, রাজ্যের সব জায়গায় উন্নয়ন হতে হবে। রাজ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লক্ষ ৭০ হাজারের অধিক পাকা ঘর তৈরি হয়েছে। যা দেশের অনেক রাজ্যের মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করে নিয়েছে। যা একটা নজির যে সঠিক সময়ে আমরা সেটা করতে পেরেছি। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, অতিরিক্ত সচিব কুন্তল দাস, পঞ্চায়েত দপ্তরের অধিকর্তা প্রসূন দে, এমজিএন রেগার চিফ ইঞ্জিনিয়ার রূপন দেববর্মা সহ প্রশাসনের অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম রূপায়নের জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখায় বিভিন্ন জেলা ও ব্লকের আধিকারিকদের পুরস্কৃত করা হয়।