সুস্থ থাকতে রোজ পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। কিন্তু অনেকেই ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। অনেকেরই গভীর ঘুমের অভাব রয়েছে। আবার অনেকে রাতে বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া শরীরের একাধিক রোগের নানা লক্ষণের ইঙ্গিত হতে পারে। তাই এরকম হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
কেন ঘুম ভাঙে
সাম্প্রতিককালে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি রাতে গড়ে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমান। ঘুমের মধ্যে সাধারণত প্রতি ৯০ মিনিট অন্তর আমাদের ‘স্লিপ সাইকেল’ বদলাতে থাকে। সেই সময়ে ঘুম ভাঙা স্বাভাবিক। সারা দিনে যদি অত্যাধিক পরিমাণে জল, কফি বা মদ পান করা হয়, তাহলে রাতে বারবার ঘুম ভাঙতে পারে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়।
সারা দিনের ব্যস্ততার পর আমাদের শরীর সাধারণত রাতে তাপমাত্রা পরিবর্তন করে। কারণ তখন শরীর বিশ্রামে থাকে। তাপমাত্রা পরিবর্তনের সময় বেশি গরম বা ঠান্ডা অনুভব ঘুম ভাঙার কারণ হতে পারে। যাঁরা নিয়মিত ক্লান্তি এবং অবসাদে ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও রাতে বারবার ঘুম ভাঙার সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও কোনও স্বপ্ন বা আওয়াজেও গভীর ঘুম ভঙ্গ হতে পারে।
কোন কোন অসুস্থতার লক্ষণ
বারবার ঘুম ভাঙা শরীরের একাধিক রোগের লক্ষণের দিকে নির্দেশ করতে পারে।
১) বারবার ঘুম ভাঙলে, ব্যক্তির অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া রয়েছে কিনা, তা পরীক্ষা করা উচিত। এই রোগের ক্ষেত্রে ঘুমের মধ্যে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
২) রাতে বারবার ঘুম ভাঙা অনেক সময়েই অবসাদ, ক্লান্তি বা দুশ্চিন্তার দিকে নির্দেশ করতে পারে।
৩) যাঁদের অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা রয়েছে, তাঁদেরও রাতে বারবার ঘুম ভাঙতে পারে।
৪) মহিলাদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে ঋতুকালীন সময়ে দেহে হরমোনের তারতম্যের কারণে রাতে ঘুমাতে অসুবিধা হতে পারে।
৫) অনেক সময় হঠাৎ করে শরীরে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে ঘুম ভেঙে যায়। এর ফলে সেই ব্যক্তির বেশি ঘাম হতে পারে।
রাতে ঘুমোনোর সমস্যা থেকে শরীরে আরও অন্যান্য সমস্যার ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে। তাই এরকম পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।