দুর্গাপুজো মানেই দেবী দুর্গার আগমন, আর দুর্গা মানেই নারী শক্তির প্রতীক। সেই নারী শক্তিকেই সমাজের ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে সম্মান জানাতে এক অনন্য উদ্যোগ নিল আলিপুরদুয়ারের সায়ন্তী দাস ও ধতুপর্না চৌধুরী। দুর্গাপুজোর দিন আয়োজিত হলো এক বিশেষ সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান, যেখানে সমাজের কর্মজীবী নারীদের কৃতিত্বকে সামনে আনা হয়।
শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে ছিল নাচ, গান, আবৃত্তি সহ নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। মঞ্চে একের পর এক পরিবেশনায় ফুটে উঠল ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নানা দিক। পাশাপাশি চলল নারী শক্তিকে সম্মান জানানোর অনুষ্ঠান।
এদিন সম্বর্ধিত হন বিভিন্ন ক্ষেত্রের নারীরা— শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী: শিক্ষিকা, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলার কারিগর।
তামালিকা সরকার: ইএনটি সার্জন, স্বাস্থ্য পরিষেবার অন্যতম প্রতিনিধি।
বাবিথা রায় বন্দ্যোপাধ্যায়: পুলিশকর্মী, সমাজে নিরাপত্তার অগ্রদূত।
সপ্তপর্ণী চক্রবর্তী: কারাতে প্রশিক্ষক, নারী আত্মরক্ষার এক প্রতীক।
স্বপ্না বিশ্বাস: নৃত্যশিল্পী, নৃত্যের মাধ্যমে সমাজকে জাগ্রত করেন।
শুভ্রা সমাজদার: কবি, কবিতার মাধ্যমে মানবিকতার বার্তা ছড়ান।
জয়িতা শিল: সঙ্গীতশিল্পী, সুরের আবহে সমাজকে যুক্ত করেন।
সাবিত্রী: পরিচারিকা, নীরব থেকেও সমাজের দায়িত্ব পালন করেন।
এছারও সম্বর্ধনা জানানো হয়
বৃহন্নলা সমাজের প্রতিনিধি: বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামী, সমাজের সমতার বার্তাবাহক।
অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন সায়ন্তী দাস (নৃত্যভূমি ডান্স একাডেমির শিক্ষিকা ও কর্ণধার) এবং ঋতুপর্ণা চৌধুরী (শ্রিলোক আবৃত্তি সংস্থার শিক্ষিকা ও কর্ণধার)। তাঁদের মতে, “দুর্গাপুজোর আসল বার্তা শুধু আনন্দ নয়, সমাজে নারী শক্তির অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া। প্রতিটি কর্মজীবী নারীই আসলে একেকজন দুর্গা।”
স্থানীয় বাসিন্দারাও এই উদ্যোগে ভীষণ খুশি। তাঁদের বক্তব্য, পুজো মানেই শুধু আলো, মণ্ডপ বা প্রতিযোগিতা নয়—পুজোর মাধ্যমে সামাজিক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। নারী শক্তিকে যে সম্মান দেওয়া হলো, সেটাই সমাজের কাছে এক বড় শিক্ষা।
আলিপুরদুয়ার নেতাজী রোড দূর্গাবাড়ির আয়োজিত অনুষ্ঠান এই মহতী প্রয়াস এ বছর দুর্গোৎসবকে ভিন্নমাত্রা দিয়েছে। নারী শক্তির সম্মানেই যেন ফুটে উঠল দুর্গাপুজোর আসল মাহাত্ম্য।
