ভারতের পর এবার বাংলাদেশেও বাড়ল পেট্রোল ও ডিজেলের দাম। মূলত, ডিজেল ও কেরোসিন প্রতি লিটার ৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে। অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রোল ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল রাত ১২ টা থেকে এই দাম কার্যকর করা হয়েছে। মূলত, শুক্রবার বাংলাদেশ মন্ত্রকের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ দফতর মারফত এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এর আগে গত বছরের নভেম্বরে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। সে সময় ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৮০ টাকা। তার আগে এই দুই জ্বালানি তেলের দাম ছিল লিটারে ৬৫ টাকা। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার প্রবণতা থাকলেও অকটেন ও পেট্রোলের দাম বাড়ায়নি সরকার।
এরপর ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরুতে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যায়। এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেল প্রতি ব্যারেল ৭৪ দশমিক শূন্য ৪ ও অকটেন ৮৪ দশমিক ৮৪ মার্কিন ডলারে নেমে এলে ডিজেল ও অকটেন প্রতি লিটার যথাক্রমে ৮০ ও ৮৯ টাকায় বিক্রি সম্ভব হতো, যা এখন প্রায় অসম্ভব। কারন, এ বছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ধারাবাহিকভাবে পরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকে। যে কারনে গত জুলাইয়ে ডিজেল ও অকটেনে বিপিসি প্রায় ৭৮ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। এর আগের দুই মাসে লোকসানের পরিমাণ ছিল শতাধিক কোটি টাকা। এ বছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বিপিসি লোকসান করেছে ৮ হাজার ১৪ কোটি টাকার ওপরে লোকসান দিয়েছে। এখন প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকায় বিক্রি হলেও বিপিসিকে ৮ দশমিক ১৩ টাকা করে প্রতি লিটারে লোকসান গুনতে হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। কারণ, গত মাসের গড় হিসাবে প্রতি লিটার ডিজেলে ১২২ দশমিক ১৩ টাকা খরচ পড়বে।
এদিকে, দাম বাড়ানোর ঘোষণার পরে মোটরসাইকেল চালকদের ভিড় দেখা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় । এসময় পাম্পের কর্মচারীরা পাম্প বন্ধ করে সরে পড়ে। পরে তেল নিতে আসা মোটরসাইকেল চালকদের চাপে তারা পাম্প চালু করতে বাধ্য হয়। তবে প্রতিটি মোটরসাইকেলে ১০০ টাকার তেল দিতে রাজি হয়। তেল নিতে আসা নুরে আলম জানান, গাড়িতে তেল না থাকায় তিনি রাত পৌনে ১১টার দিকে পাম্পে আসেন। মুহূর্তের মধ্যে প্রায় শতাধিক মোটরসাইকেল পাম্পে এসে জড়ো হয়। কিন্তু পাম্পের কর্মচারীরা পাম্প বন্ধ করে দেয়। এবং তেল নাই বলে জানিয়ে দেয়। পরে সেখানে আসা মোটরসাইকেল চালকরা প্রতিবাদ করতে শুরু করলে প্রত্যেককে ১০০ টাকার তেল দিতে রাজি হয়।