ডেঙ্গু সচেতনতা বার্তা

1 min read

পশ্চিমবঙ্গ সরকার শেষ পর্যন্ত স্বীকার করল, যে রাজ্যে ডেঙ্গি রোগী ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রায় প্রতি বছরের মতো এই বছরেও ডেঙ্গিপ্রবণ জেলা হিসাবে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, মালদা, নদিয়ার নাম উঠে এসেছে। স্বরাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত থেকে জেলাস্তর পর্যন্ত পতঙ্গনাশক গতিবিধি বাড়াতে বলা হয়েছে। এ সকল সংক্রমণের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ, অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু ডেঙ্গির মতো পতঙ্গবাহিত রোগ, যা প্রতি বছর প্রশাসনের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাকে সফল ভাবে প্রতিরোধ করতে শুধুমাত্র নিয়ন্ত্রণের কাজটি যে যথেষ্ট নয়, তা এত দিনের অভিজ্ঞতাও রাজ্য প্রশাসনকে শেখাতে পারল না।

ডেঙ্গি নিয়ে তামাশা যেন প্রতি বছর এই রাজ্যে নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। একের পর এক অল্পবয়সি, কর্মক্ষমরা এই রোগের শিকার হচ্ছে। অথচ এত বছরেও কোনও সুসংহত, কর্মী-বাহিনী গড়ে তোলা গেল না, যাঁরা সারা বছর তৎপরতার সঙ্গে রোগ প্রতিরোধের কাজটি করবেন। প্রতি বছর মৃত্যুমিছিল শুরু হলে তবে প্রশাসনের টনক নড়ে। আর কত প্রাণের বিনিময়ে বোধগম্য হবে, উপযুক্ত দীর্ঘ প্রস্তুতি ছাড়া ডেঙ্গির মতো সংক্রামক রোগের মোকাবিলা সম্ভব নয়। ফুলদানি, টব আর চৌবাচ্চার জলে লার্ভা খোঁজার পাশাপাশি পরিত্যক্ত জমিতে জমা আবর্জনা, এবং থানার সামনে পরিত্যক্ত গাড়িতে জল জমার দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে দেড় হাজার ডেঙ্গি রোগী ভর্তি আছেন এবং তাঁদের মধ্যে ২৫ জনের অবস্থা গুরুতর। কিন্তু হাসপাতালের সীমানার বাইরে যে বিরাট সংখ্যক মানুষ এ বছরে জানুয়ারি থেকে সংক্রমিত হয়েছেন সেই সংখ্যাটি কত এবং কত জনই বা মারা গিয়েছেন— সে বিষয়ে কুলুপ এঁটেছেন সরকারি কর্তারা। তথ্য ফাঁস হলে সিআইডি তদন্তের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। কর্তাদের আচরণ দেখে মনে হয়, ডেঙ্গির বাৎসরিক সংক্রমণ বৃদ্ধি, এবং মৃত্যুর ঘটনা যেন স্বাভাবিক । অথচ, গোড়া থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা করলে এই রোগকে আটকে দেওয়া সম্ভব, তা ইতিপূর্বে দেখা গিয়েছে।

You May Also Like